বড়দিনের ছুটিতে ঘরে বসেই দর্শকরা পেলেন ফেলুদাকে, আর সেটা সম্ভব করলেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। সদ্য মুক্তি পাওয়া “ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর” সিরিজে ফেলুদা হিসেবে টোটা রায় চৌধুরী কতটা দর্শকদের মন জয় করতে পেরেছেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
ফেলুদা, বাঙালির আবেগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা এক চরিত্র। সত্যজিতের এই কিংবদন্তি চরিত্রকে ছোট পর্দায় তুলে আনতে পরিচালক নিজস্ব ঢঙে চিত্রনাট্যে পরিবর্তন করেছেন। গল্পের প্রায় ৭০ শতাংশ মূল লেখার সঙ্গে মিলে গেলেও বাকি অংশে দেখা যায় সৃজিতের নিজস্ব সংযোজন। ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, জঙ্গি কার্যকলাপ এবং ড্রাগসের মতো বিষয় যোগ করা হয়েছে গল্পে, যা ফেলুদার অরিজিনাল ঘরানার থেকে খানিকটা আলাদা।
গল্পটি শুরু হয় ফেলুদা, তোপসে এবং লালমোহনবাবুর কাশ্মীর ভ্রমণ দিয়ে। সেখানে তাঁদের দেখা হয় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সিদ্ধেশ্বর মল্লিকের সঙ্গে, যিনি নিজের দেওয়া কিছু ফাঁসির আদেশ নিয়ে সংশয়ে ভুগছেন। প্ল্যানচেটের মাধ্যমে মৃতদের আত্মার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা এবং তার পরবর্তী ঘটনার রহস্য নিয়ে এগোয় কাহিনি।
সিরিজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হলো ফেলুদার পুরোনো কেসগুলির কোলাজ, যা নস্টালজিয়া বাড়ায়। তবে টানটান উত্তেজনায় খানিক ঘাটতি এবং গল্পের বাড়তি টানাপোড়েন দর্শকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। টোটা রায় চৌধুরী আবারও ফেলুদা হিসেবে নিজের ছাপ রেখেছেন। তোপসে এবং লালমোহনবাবুর চরিত্রেও যথাযথ অভিনয় করেছেন কল্পন ঘোষাল ও অনির্বাণ চক্রবর্তী।
কাশ্মীরের সৌন্দর্য অসাধারণভাবে ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। তবে কিছু জায়গায় অপ্রয়োজনীয় এডিটিং দর্শকের চোখে লেগেছে। সব মিলিয়ে, সিরিজটি ফেলুদা-প্রেমীদের জন্য একটি ভালো চেষ্টার উদাহরণ হলেও, প্রত্যাশা পূরণে কিছুটা ঘাটতি রয়ে গেছে।