বাংলাদেশের সংবিধান পরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে তিনটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। এতদিন সংবিধানের মূল নীতি ছিল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। এবার কমিশনের প্রস্তাব, গণতন্ত্র রেখে বাদ দেওয়া হোক বাকি তিনটি নীতি। নতুন নীতিগুলির মধ্যে থাকবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও বহুত্ববাদ।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে গৃহীত সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে অন্যতম মূলনীতি হিসেবে রাখা হয়েছিল। যদিও ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র না হলেও, বাংলাদেশের সংবিধানে এটি বিশেষ গুরুত্ব পেত। এবার সেই ধর্মনিরপেক্ষতাকে বদলে বহুত্ববাদ আনার সুপারিশ করেছে কমিশন।
কমিশনের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান সাংবিধানিক নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার প্রস্তাব এসেছে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের সাংবিধানিক পরিচয়েও বদল আসতে পারে। এতদিন তারা ‘বাঙালি’ হিসেবে পরিচিত হলেও, নতুন নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশি’।
কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধানের খসড়া সংস্কার করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই এই প্রস্তাব বাস্তবায়নের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার।
উল্লেখ্য, বুধবার অধ্যাপক আলি রিয়াজের নেতৃত্বে গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের রিপোর্ট অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের কাছে জমা দিয়েছে। এখন দেখার, বাংলাদেশের সংবিধানে এই মৌলিক পরিবর্তনগুলো আদৌ কার্যকর হয় কি না।