পরমাণু অস্ত্রের নতুন ডিজাইন নিয়ে গোপনে কাজ করছে ড্রাগনের দেশ। এ তথ্য জানা গেছে চিনের নতুন পারমাণবিক ফিউশন রিঅ্যাক্টরের ছবি দেখে নতুন চুল্লিটি চিনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিয়ানিয়াং-এ অবস্থিত। ইতিমধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে চিনে। এছাড়াও এই দেশ আকাশ, স্থল ও সমুদ্র থেকে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করার ক্ষমতা রাখে। ভারত ও রাশিয়া ছাড়া চিনের প্রতিবেশী কোনো দেশের কাছেই পারমাণবিক বোমা নেই। এমন পরিস্থিতিতে পারমাণবিক বোমার নতুন ডিজাইন নিয়ে তাঁদের গবেষণা বিশ্বের উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
দুটি বিশ্লেষণী সংস্থার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিয়ানিয়াং-এ একটি বিশাল লেজার-জ্বলানো ফিউশন গবেষণা কেন্দ্র তৈরি করছে। পারমাণবিক অস্ত্রের নকশা এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুসন্ধানে সহায়তা করতে পারে এই গবেষণা কেন্দ্র। স্যাটেলাইট চিত্রগুলিতে গবেষণা কেন্দ্রের বাইরের অংশ দেখা গেছে। সেখানে সেন্ট্রাল এক্সপেরিমেন্টাল বে-তে হাইড্রোজেন আইসোটোপ সম্বলিত একটি টার্গেটিং চেম্বার থাকবে, যেখানে শক্তিশালী লেজারগুলি শক্তি উৎপন্ন করতে একত্রিত হবে বলে খবর।
হেনরি এল. স্টিমসন সেন্টারের পারমাণবিক নীতি বিশ্লেষক উইলিয়াম আলবার্ক বলেন, “এনআইএফ-টাইপ সুবিধা সহ যে কোনো দেশ তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে এবং তাদের কাছে থাকা অস্ত্রের নকশা উন্নত করতে পারে। এটি অস্ত্র পরীক্ষা না করেই ভবিষ্যতের বোমার নকশা পরীক্ষা করতে পারে।” এর চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সুবিধা সম্পর্কিত প্রশ্ন চিনের কাছে উল্লেখ করেছে। মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি চিনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
২০২০ সালের নভেম্বরে, স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করেন মার্কিন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ দূত মার্শাল বিলিংসলে। সেখানে চিনের পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়। এই চিত্রগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল মিয়ানয়াং অঞ্চলের একটি প্লট, যেখানে “২০১০ সাল থেকে নতুন গবেষণা বা উৎপাদন এলাকা” হিসেবে লেবেলযুক্ত জমি দেখা যায়।
রয়টার্সের সাথে শেয়ার করা নির্মাণ সংক্রান্ত নথি বলছে, এই স্থানটি আসলে একটি ফিউশন গবেষণা কেন্দ্র। লেজার ফিউশন মেজর ডিভাইস ল্যাবরেটরি নামে পরিচিত এটি। ভবিষ্যতে পৃথিবীর শক্তি চাহিদা মেটাতে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে এই প্রযুক্তি। কারণ এটি প্রচলিত জ্বালানির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব। তাই, শুধু সামরিক দিক থেকেই নয়, বরং নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস তৈরির পথেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ চিনের এই গবেষণা কেন্দ্র।