প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় মৌনী অমাবস্যার ‘শাহি স্নান’-এ পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩০ জনের, গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ৬০ জন। প্রশাসনের দাবি ছিল ‘বিশ্বমানের ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা’, কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাতেই সেই ব্যবস্থার ত্রুটি সামনে চলে আসে।
মঙ্গলবার রাত ২টার পর থেকে পুণ্যার্থীদের প্রবল ভিড়ের কারণে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করতে গিয়ে অনেকেই ভারী মালপত্র নিয়ে ছিলেন, যা পড়ে গিয়ে আরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। ব্যারিকেড ভেঙে গেলে বহু মানুষ মাটিতে পড়ে যান এবং তাদের উপর দিয়েই হুড়োহুড়ি চলতে থাকে। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়।
যোগী আদিত্যনাথের সরকার আগেই দাবি করেছিল যে, কুম্ভমেলায় ‘বিশ্বমানের ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা’ রয়েছে। তবে এই দুর্ঘটনা সেই দাবিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। প্রশাসনের একাংশ ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব তুলেছে, দাবি করা হচ্ছে যে, গভীর রাতে কয়েকজন যুবক বোমার গুজব ছড়িয়ে দিয়েছিল, যার ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ শোক প্রকাশ না করে শুধুমাত্র গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিরোধী দলগুলি প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকারকে দায়ী করছে। সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী পুলিশের গাফিলতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগর মেলার নিরাপত্তার তুলনা টেনে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনকে কটাক্ষ করেছেন।
প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ফোন করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। পদপিষ্টের ঘটনার পর মৌনী অমাবস্যার ‘শাহি স্নান’ আপাতত স্থগিত করেছে সাধুদের আখড়া। ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চলছে, তবে এই দুর্ঘটনা প্রশাসনের প্রস্তুতিকে বড় প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।