উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের সোনাডাঙ্গি এলাকায় চাঞ্চল্যকর ঘটনা। দুধ চা না পেয়ে রাগে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে রেললাইনে আত্মহত্যা করলেন এক বৃদ্ধ। বৃহস্পতিবার সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। মৃতের নাম শ্যামাপ্রসাদ দাস (৬৩)। তিনি পেশায় দলিল লেখক ছিলেন।
শ্যামাপ্রসাদ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। হাই সুগার, কিডনি বিকল এবং নার্ভের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ডাক্তার তাঁর জন্য দুধ চা নিষিদ্ধ করেছিলেন। তাই স্ত্রী তপতি দাস প্রতিদিনের মতো এদিনও তাঁকে লাল চা দেন। কিন্তু শ্যামাপ্রসাদ দুধ চা খাওয়ার জন্য জেদ ধরে বসেন।
ঘটনার দিন, ছেলে প্রভাকর স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। সকালের নাস্তার সময় শ্যামাপ্রসাদ স্ত্রীকে দুধ চায়ের আবদার করেন। কিন্তু স্ত্রী ডাক্তারি নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে তাঁকে লাল চা খেতে বলেন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
পরিবারের লোকজন তখনও ভাবেননি, সামান্য এই কারণে তিনি আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই খবর আসে, রেললাইনে তাঁর ছিন্নভিন্ন দেহ পড়ে রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই সময় শিলিগুড়ি থেকে রাধিকাপুরগামী আপ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস আসছিল। শ্যামাপ্রসাদ লাইনের পাশে জুতো ও লাঠি রেখে ট্র্যাকে শুয়ে পড়েন। মুহূর্তের মধ্যে ট্রেন চলে যায় তাঁর উপর দিয়ে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে রেল পুলিশ ও রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। পরিবারের লোকজন এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছেলে প্রভাকর বলেন, ‘সকালেই সবাই একসঙ্গে চা খাচ্ছিলাম। মা বাবাকে লাল চা দেয়। বাবা বললেন, ডাক্তার যতই বারণ করুক, আমি দুধ চা ছাড়া খাব না। মা রাজি হননি। এরপর বাবা রাগ করে বেরিয়ে যান, আর ফেরেননি।’
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা শ্যামাপ্রসাদের আকস্মিক মৃত্যুতে হতবাক। পরিবার এখন শোকস্তব্ধ।