ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার বসানো নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতা এবার মিটতে পারে। আগামী ১৮-২০ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে বিএসএফ ও বিজিবির মহাপরিচালকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যেই এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ওমানের মাসকটে অনুষ্ঠিত ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের ফাঁকে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
১৯৭৫ সালে প্রথমবার বিএসএফ-বিজিবির (সাবেক বাংলাদেশ রাইফেলস) মহাপরিচালকদের বৈঠক হয়েছিল। এরপর ১৯৯৩ সালে দুই দেশের রাজধানীতে দ্বিবার্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে এই বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। অবশেষে ফেব্রুয়ারিতে সেই বৈঠক হতে চলেছে।
সম্প্রতি সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মালদার সুকদেবপুর, জলপাইগুড়ি, নদিয়া এবং উত্তর দিনাজপুরের মতো জায়গায় বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। বিএসএফ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে গেলে বিজিবি বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি কোদালিয়া নদীর পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় বিজিবি নিজেদের ‘দখল প্রতিষ্ঠা’রও চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ১৯৭৫ সালের আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী, জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজের মধ্যে প্রতিরক্ষা কাঠামো তৈরি করা যাবে না। তবে ২০১০ সালে বাংলাদেশ লিখিত অনুমতি দিয়েছিল যে, প্রয়োজনে ভারত সীমান্তে ১৫০ গজের ভেতরেও কাঁটাতার বসাতে পারবে। এখন নতুন সরকার এই অবস্থানে অনড় থাকবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
বিএসএফ-বিজিবির আসন্ন বৈঠকে কাঁটাতার সংক্রান্ত সমস্যা ছাড়াও অনুপ্রবেশ, চোরাচালান ও অন্যান্য সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। জয়শংকর ও তৌহিদ হোসেনের বৈঠকের পর দু’দেশের মধ্যে নতুন সমঝোতার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে দুই দেশের ঐক্যমত্য কতটা গড়ে ওঠে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।