মহাকুম্ভে একের পর এক দুর্ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু ঘিরে যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “মহাকুম্ভ এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে। পবিত্র গঙ্গাকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু এত মানুষের মৃত্যু ও প্রশাসনিক অব্যবস্থা কি মেনে নেওয়া যায়? বড়লোক ও ভিআইপিদের জন্য লক্ষ টাকার ক্যাব, আর সাধারণ মানুষকে ১৫-২০ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে!”
এর আগেও কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় মুখ খুলেছিলেন মমতা, তবে এবার আরও চাঁচাছোলা ভাষায় যোগী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন। যদিও তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম উল্লেখ করেননি, কিন্তু তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য যে উত্তরপ্রদেশ সরকার, তা স্পষ্ট।
সোশ্যাল মিডিয়ায় মহাকুম্ভ নিয়ে ব্যাপক প্রচার হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে “১৪৪ বছর পর মহাকুম্ভ” অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই আবেগে মানুষ ভিড় করছেন, কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করেন মমতা। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কুম্ভের এত বড় দুর্ঘটনার পর কেন্দ্রীয় সরকার কতগুলো তদন্ত কমিটি গঠন করেছে?”
মুখ্যমন্ত্রীর আরও অভিযোগ, “কুম্ভে বাংলার যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের মৃত্যুর শংসাপত্র বা ময়নাতদন্তের রিপোর্টও দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসন দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সময় সই করিয়ে নিচ্ছে, কিন্তু কোনও নথি দিচ্ছে না।”
রাজ্য সরকার মৃতদের পরিবারকে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানান মমতা। গঙ্গাসাগর মেলার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “সেখানে ছ’মাস আগে থেকে পরিকল্পনা হয়, মন্ত্রীদের দায়িত্ব থাকে। কিন্তু কুম্ভে কোনও পরিকল্পনা ছিল না।”
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে চলছে মহাকুম্ভ মেলা, যেখানে সম্প্রতি পদপিষ্ট হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাঁদের মধ্যে ছিলেন বাংলার পুণ্যার্থীরাও।
