বিধানসভায় ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে রাজনৈতিক ঝড় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্যকে হুমকি বলে দাবি করে বিজেপির একাংশ, বিশেষত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচি সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন। শুভেন্দুর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী ‘একটা বিশেষ সম্প্রদায়’কে উস্কে দিয়ে তাঁকে ভয় দেখাচ্ছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে কৌস্তভ বাগচি সরাসরি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দ্বারস্থ হয়েছেন।
মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশনে জবাবি ভাষণে মমতা বলেন, “একটা ধর্মের নাম নিয়ে কুৎসা করছেন। এত অপ্রচার করছেন। একদিন তাঁরা যদি একটা আন্দোলনের ডাক দেয়, সামলাতে পারবেন তো?” মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরই শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, মমতা তাঁকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন। শুভেন্দুর সাফ কথা, “আপনি থ্রেট করেছেন। বলেছেন, একটা বিশেষ সম্প্রদায় আমার বিরুদ্ধে নামলে সামলাতে পারব তো? আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে বলব ব্যবস্থা নিতে।” তিনি আরও জানান, “যেহেতু আমার নিরাপত্তা হাইকোর্ট দিয়েছে, তাই আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের ক্লিপিং নিয়ে আদালতে যাব। আর আমার গায়ে আঁচড় লাগলে বাংলার পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দায়ী থাকবেন।”
এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি বিষয়টি আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যান। বুধবার সকালে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের একটি ভিডিও নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন এবং ক্যাপশনে লেখেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিহাদিদের হয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে ভয় দেখাচ্ছেন।” এরপরই তিনি রাজ্যপালকে ইমেল মারফত অভিযোগ জানান ও দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে চাপানউতোর তুঙ্গে। বিজেপির দাবি, মমতা আসলে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছেন এবং বিরোধীদের ভয় দেখাচ্ছেন। তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করছে। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের এই মন্তব্য আদৌ হুমকি কি না, তা নিয়ে এখন রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা।
