সন্তান পড়তে বসছে, কিন্তু মনোযোগ নেই? জোর করে পড়ানোর পরিবর্তে যদি সঠিক কৌশল প্রয়োগ করেন, তাহলে সে নিজেই আগ্রহী হয়ে উঠবে। পরীক্ষার ফলাফল ভালো করতে চাইলে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলতে হবে।
প্রথমত, অতিরিক্ত চাপ দেওয়া ঠিক নয়। একসঙ্গে অনেকটা পড়া দিলে শিশুর মধ্যে বিরক্তি তৈরি হয়। বরং অল্প অল্প করে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে সে ধাপে ধাপে শিখতে পারবে এবং পড়ার প্রতি আগ্রহ হারাবে না।
দ্বিতীয়ত, সময়সূচি তৈরি করা জরুরি। শুধু পড়াশোনার সময় নির্ধারণ করলেই হবে না, খেলাধুলা, টিভি দেখা এবং বিশ্রামেরও নির্দিষ্ট সময় ঠিক করতে হবে। এতে শিশু সময় ব্যবস্থাপনা শিখবে এবং পড়ার সময় আরও বেশি মনোযোগী হবে।
তৃতীয়ত, পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র শিশুকে পড়তে বললেই হবে না, বরং বাসায় এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে যেখানে সবাই কিছু না কিছু শিখছে। অভিভাবকরাও যদি বই, ম্যাগাজিন বা পত্রিকা পড়েন, তাহলে শিশু স্বাভাবিকভাবেই বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে।
চতুর্থত, সন্তানের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা দরকার। সে যদি আগের তুলনায় সামান্য উন্নতি করে, তবে তার প্রশংসা করুন। বকাঝকা করলে তার আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে। বরং উৎসাহ দিলে সে আরও মনোযোগী হয়ে পড়বে এবং ভালো ফল করতে আগ্রহী হবে।
পঞ্চমত, সৃজনশীল কাজ থেকে বিরত রাখা উচিত নয়। অনেক অভিভাবক মনে করেন যে, পরীক্ষার আগে গান, নাচ, ছবি আঁকা এসব বাদ দেওয়া উচিত। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, সৃজনশীল কাজ শিশুদের মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি সৃজনশীল কাজের সুযোগ দিন।
সবশেষে, প্রশ্নের উত্তর দিতে উৎসাহিত করুন। শিশুর যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে ধৈর্য ধরে উত্তর দিন। অনেক সময় অভিভাবকরা বিরক্ত হয়ে তাদের থামিয়ে দেন, যা শিশুর জানার আগ্রহ কমিয়ে দেয়। বরং প্রশ্নের উত্তর দিন বা জানাতে অপারগ হলে পরে বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিন। এতে সে শিখতে আগ্রহী হবে এবং বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে।
এই কৌশলগুলো প্রয়োগ করলে সন্তানের পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়বে এবং সে নিজেই বই হাতে নেবে।