বিশ্ব মাতৃভাষা দিবসে বাংলাদেশজুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার রাতেই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গুণবতী কলেজ সংলগ্ন মাঠে মৌলবাদী জিহাদিরা শহিদ মিনার ভেঙে ফেলে। শুধু তাই নয়, দেশের একাধিক জায়গায় মাতৃভাষা দিবস উদযাপনে বাধা দিয়েছে উগ্রপন্থীরা। ফলে প্রশ্ন উঠছে—যে ভাষার জন্য রক্ত ঝরেছিল, সেই ভাষা কি আজও নিরাপদ?
ঢাকা শহিদ মিনারে রাত ১২টায় শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস সেখানে যাননি। রাষ্ট্রপতির প্রতি দূরত্ব বোঝাতেই কি তিনি পরের দিন শ্রদ্ধা জানান?
হিলি সীমান্তেও এবার অন্য চিত্র। প্রতিবছর যেখানে ভারত-বাংলাদেশ যৌথভাবে ভাষা দিবস উদযাপন করত, সেখানে এবার কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়নি। ভারতীয় উদ্যোক্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির প্রতিবাদেই এই সিদ্ধান্ত।
কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসেও এবার বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে না। শুধুমাত্র কূটনীতিক ও কর্মীরা শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাবেন।
দেশের নানা প্রান্তে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। পাকিস্তান আমলে জিন্নাহ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছিলেন, তার বিরুদ্ধেই শুরু হয়েছিল ভাষা আন্দোলন। ১৯৫২ সালে সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতরা প্রাণ দিয়ে সেই আন্দোলন জিতেছিলেন। কিন্তু আজকের বাংলাদেশ কি সত্যিই সেই আত্মত্যাগের মর্যাদা রাখতে পারছে? শহিদ মিনার ভেঙে ফেলা, ভাষা দিবসে বাধা দেওয়া—এসব কি ভাষা আন্দোলনের শহিদদের রক্তকে ব্যর্থ করে দিল?