এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে ভাঙা সিটে বসে ভ্রমণ করতে হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে। তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল এক্স-এ টুইট করে এই তথ্য দিয়েছেন। পরে শিবরাজের রাগের জন্য এয়ার ইন্ডিয়া ক্ষমা চেয়েছে বিমান সংস্থা। শিবরাজের টুইটের জবাবে এয়ার ইন্ডিয়া বলেছে, “প্রিয় মহাশয়, আপনার অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত। দয়া করে নিশ্চিন্ত থাকুন, আমরা এই বিষয়টি মনোযোগ সহকারে খতিয়ে দেখছি। যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। আপনার সাথে কথা বলার সুযোগ পেলে আমরা খুশি হব, অনুগ্রহ করে আপনার সুবিধাজনক সময়ে আমাদের ডিরেক্ট ম্যসেজ করুন।”
এই বিষয়ে কংগ্রেস শিবরাজ সিং চৌহানকেও কটাক্ষ করেছে। রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি জিতু পাটোয়ারী বলেছেন যে মধ্যপ্রদেশ সহ সারা দেশের কৃষকরা তাদের নিজস্ব জমি বাঁচানোর জন্য লড়াই করছে। কিন্তু, আমাদের কৃষিমন্ত্রী ভাঙা “চেয়ার” কে অভিশাপ দিচ্ছেন। আয় দ্বিগুণ হয়নি, কৃষকরা দ্বিগুণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আমরা MSP নিয়ে সরকারের মিথ্যাচার সহ্য করছি। সার, বীজ এবং বিদ্যুতেরও ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু, যে মন্ত্রী বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন, তিনি কৃষকদের সমস্যা দেখতে পান না। কৃষকের ঘাম বা পরিশ্রম কোনটাই দৃশ্যমান নয়। এয়ার ইন্ডিয়া কোনও ভুল করেনি, তারা কেবল চেয়ার পরিবর্তন করেছে। যাতে যারা চেয়ারে বসে নিজেদের ভাগ্যকে অভিশাপ দেয় তারা কৃষকের কষ্ট বুঝতে পারে।
অন্যদিকে, সমাজবাদী পার্টির জাতীয় মুখপাত্র যশ ভারতীয় এক্স-এ লিখেছেন – “যারা বিমানে ভ্রমণ করেন তারা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হন, কিন্তু সবাই টুইট করতে সক্ষম নন। তবে পরে তিনি এই পোস্টটি মুছে ফেলেন। অন্যদিকে, উমঙ্গ সিংহার এই টুইটে আরও বলেন, শিবরাজ জি যখন হেলিকপ্টারে ভ্রমণ করতেন, তখন তিনি মানুষের সমস্যা দেখতেন না।”
আসলে,ভোপাল থেকে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল পুসা কিষাণ মেলার উদ্বোধন করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের। যার জন্য তিনি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে টিকিট বুক করে । শিবরাজ বিমানে ভাঙা সিট পান। যার উপর শিবরাজ সিং চৌহান রেগে যান। তিনি টুইট করেছিলেন যে, “আজ আমাকে ভোপাল থেকে দিল্লি আসতে হবে, পুসায় কিষাণ মেলা উদ্বোধন করতে হবে, কুরুক্ষেত্রে প্রাকৃতিক কৃষি মিশনের একটি সভা করতে হবে এবং চণ্ডীগড়ে কৃষক সংগঠনের সম্মানিত প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করতে হবে। আমি এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট নং AI436-তে একটি টিকিট বুক করেছিলাম এবং আমাকে 8C নম্বর আসন বরাদ্দ করা হয়েছিল। আমি গিয়ে সিটে বসলাম, সিটটি ভাঙা এবং ভেতরে ঢুকে ছিল। বসে থাকাটা যন্ত্রণাদায়ক ছিল। যখন আমি বিমান সংস্থার কর্মীদের জিজ্ঞাসা করলাম যে সিটটি যদি খারাপ ছিল তাহলে কেন বরাদ্দ করা হয়েছিল? তিনি বলেন, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে আগেই জানানো হয়েছিল যে এই আসনটি ভালো নয় এবং এর টিকিট বিক্রি করা উচিত নয়। এরকম কেবল একটি আসন নেই,আরও অনেক আসন রয়েছে।
শিবরাজ আরও লিখেছেন, আমার সহযাত্রীরা আমাকে আমার আসন পরিবর্তন করে আরও ভালো আসনে বসতে অনুরোধ করেছিলেন কিন্তু আমি কেন আমার জন্য অন্য বন্ধুকে ঝামেলায় ফেলব, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমি এই আসনে বসেই আমার যাত্রা শেষ করব। আমার ধারণা ছিল টাটা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেওয়ার পর এয়ার ইন্ডিয়ার পরিষেবা আরও উন্নত হতো, কিন্তু এটা আমার ভুল ধারণায় পরিণত হয়েছে। বসার অস্বস্তি নিয়ে আমার কিছু যায় আসে না, কিন্তু যাত্রীদের পুরো টাকা চার্জ করে খারাপ এবং অস্বস্তিকর সিটে বসানো অনৈতিক। এটা কি যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা নয়? ভবিষ্যতে কোনও যাত্রী যাতে এই ধরণের অসুবিধার সম্মুখীন না হন, সেজন্য এয়ার ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা কি পদক্ষেপ নেবে, নাকি যাত্রীদের তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর বাধ্যবাধকতার সুযোগ নিয়েই চলবে?”