তৃণমূলের মেগা সাংগঠনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। বক্তব্য রাখবেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটায় এই সম্মেলন শুরু হবে। এই সম্মেলনে যোগ দেবেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত, ব্লক, জেলা ও রাজ্যস্তরের নেতা নেত্রীরা। আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য করেই সুর বেঁধে দেওয়া হবে এই বৈঠকে। কোন দিকে আর কোন পথে এগোবে দল সূত্র মারফত এমনটাই জানা গেছে।
এই মুহূর্তে দলে ৩ লক্ষ ৯০ হাজার দলীয় পদাধিকারী আছেন। প্রায় ৬০ হাজারের বেশি জনপ্রতিনিধি আছেন। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রস্তুত হচ্ছে সব রাজনৈতিক দল। সাংগঠনিক রদবদল নিয়েও কথা শোনা যাচ্ছে বহুদিন ধরেই। সেই বদল কিছু হয় কি না সেটাই এখন দেখার।প্রচারের নির্দেশ কি হবে সেটা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিতে পারেন এই বৈঠকে। নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এখন থেকে কর্মসূচি দেওয়া হবে দলের নেতাদের।
আজ সোমবার হবে প্রস্তুতি বৈঠক। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি সেই বৈঠক করবেন। আর তার আগে কালীঘাটে অভিষেককে নিয়ে বৈঠক করে নিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনটাই জানা গেছে। সূত্রের খবর রবিবার বিকেলে দলনেত্রীর সাথে বৈঠক করেন দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। দুজনের মধ্যে এই মেগা বৈঠকের আগেই একপ্রস্থ আলোচনা হয়। যে আলোচনার পর তৃণমূলের অন্দরে স্বাভাবিক ভাবেই উত্তেজনা বেড়েছে।
গত দশ বছর ধরেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এই বঙ্গে নিজেদের দুর্গ অক্ষুণ্ন রেখেছে মা মাটি আর মানুষের সরকার তৃণমূল কংগ্রেস। এই বৈঠকের আগে রাজ্য জুড়ে নানা ইস্যুতে কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়েছে বলে মনে করছে বিরোধী দলগুলো। কিন্তু এই সব কিছুকে পাত্তা না দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় দুজনেই যেভাবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের খোলনলচে পাল্টে দলের সংগঠনে একটু ঝাঁকুনি দিতে চাইছেন তাতে কিছুটা হলেও কপালে ভাঁজ পরেছে দলীয় নেতা নেত্রীদের। পদ হারানোর চিন্তায় কিছুটা হলেও তাঁরা সব একটু চিন্তান্বিত রয়েছেন।
এতো গেলো বৈঠকের আগে থেকেই একটা হাওয়া তুলে দেওয়া। দলকে শুদ্ধিকরণের উনুনে গরম করে নেওয়া। কিন্তু যেটাই করা হোক রাজ্য ক্ষমতা দখল করতে যেভাবে হোক মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। আর তার জন্যে যেভাবে হোক এই দুই পক্ষ সৃষ্টি করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের সংগঠনকে অটুট রেখে এগিয়ে চলতে হবে এই নির্দেশ দিতে পারেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মেগা বৈঠকে। দলকে রক্ষা করতে হবে যে কোনো উপায়ে।
যে নির্দেশ কে মাথা পেতে মেনে নিয়ে আগামী দিনে এগিয়ে চলবে দলের প্রবীণ আর নবীন দু পক্ষ একে অপরকে জড়িয়ে আঁকড়ে ধরেই কোনো সংঘাত না করেই। এটা ঠিক যে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এর পক্ষ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ এটা একটা পারিবারিক পরিমন্ডলের মধ্য দিয়েই তৈরি হয়ে দলের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে দু পক্ষই এগিয়ে চলেছে ধীরে ধীরে তাদের নিজেদের লক্ষ্য পূরণ করতে। আর বিধানসভা ভোটের আগে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে বদ্ধপরিকর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় দু পক্ষই।
ঠিক একটা সেই সিনেমায় দেখা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলে যাওয়া আর তারপর আবার একটু ঘুমিয়ে পড়া রেস্ট নেওয়া। আবার দরকার হলে যুদ্ধ শুরু করে দেওয়ার একটা বাতাবরণ সৃষ্টি করা। যেখানে শুধু ভীড় বাড়বে কালীঘাটে আর ক্যামাকস্ট্রীটে। আলিম্মুদিন বা মুরলিধর লেনে নয়। যে ভীড় দেখে বিরোধীরা হৈ চৈ হুল্লোড় করবেন পিসি আর ভাইপোর লড়াই বলে। এই দু পক্ষের লড়াই একটা পলিটিকাল স্ট্র্যাটেজি। বিরোধীরা যাই বলুক পরিবারতন্ত্রের কথা। সেই বিরোধীদের ঘোল খাওয়াতেই দু পক্ষের এই রাজনৈতিক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।
অপেক্ষা শুধু একটাই হ্যান্ড ওভার না টেক ওভার। এক পরিবারেই ক্ষমতার মৌচাকে মধু জমে যাওয়া। আর সেই মধুকেই আস্বাদন করা আর তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করা জীবনভোর। বেশ ভালো ব্যাপার কিন্তু এটা। জয় মা মাটি মানুষের জয়। জয় তৃণমূল কংগ্রেসের জয়। বিরোধীরা হৈ চৈ হুল্লোড় করুক আর এই যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলে হাসিমুখে ক্ষমতা দখল করুক ঘাসফুলের তৃণমল। এই লক্ষ্যেই এই মেগা বৈঠক।