কাশী, অর্থাৎ বারাণসী, হিন্দু ধর্মের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান। প্রতি বছর অসংখ্য সাধু ও ভক্ত এখানে বিভিন্ন তীর্থযাত্রায় অংশ নেন। এবার নাগা সাধুরা বিশেষ এক কারণে কাশীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। তাঁদের এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য হলো পঞ্চকোষী পরিক্রমা সম্পন্ন করা, যা হিন্দু ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
পঞ্চকোষী পরিক্রমা মূলত কাশীর পবিত্র পাঁচটি স্থানের পরিক্রমা, যা প্রায় ৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই যাত্রা পাঁচদিন ধরে চলে, যেখানে ভক্তরা নির্দিষ্ট পাঁচটি স্থানে রাত্রি যাপন করেন এবং বিশেষ উপাসনা করেন। হিন্দু ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, এই পরিক্রমা সম্পন্ন করলে মোক্ষলাভ সম্ভব হয় এবং পাপমোচন ঘটে। নাগা সাধুরা কঠোর তপস্যা ও সংযমের মাধ্যমে এই যাত্রায় অংশ নেন।
নাগা সাধুরা সাধারণত শৈব সম্প্রদায়ের অংশ এবং কঠোর তপস্যার জন্য পরিচিত। তাঁরা দেহে ছাই মেখে, নগ্ন দেহে এবং নিরামিষ আহার গ্রহণ করে সাধনার কঠোর জীবনযাপন করেন। কাশীর পঞ্চকোষী যাত্রায় অংশগ্রহণ তাঁদের আধ্যাত্মিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি ধর্মীয় রীতিনীতির প্রতি তাঁদের নিষ্ঠা প্রকাশ করে।
এ বছর পঞ্চকোষী পরিক্রমায় ভক্তদের ভিড় অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। কাশীর ঘাট থেকে মন্দির, সর্বত্রই ধর্মীয় আবহ ছড়িয়ে পড়েছে। শহরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, কারণ হাজার হাজার ভক্ত ও সাধুর সমাগমের ফলে প্রশাসন অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে।
সাধারণ ভক্তদের পাশাপাশি নাগা সাধুদের উপস্থিতি এই পরিক্রমাকে আরও আধ্যাত্মিক ও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে। তাঁদের কঠোর অনুশাসন ও ধর্মীয় আনুগত্য পঞ্চকোষী পরিক্রমাকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছে।