যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে নকশালমুক্ত করা সম্ভব, যদি বিজেপি ক্ষমতায় আসে—এই মন্তব্য করে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মতে, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও নকশালপন্থীদের শক্ত ঘাঁটি ছিল, কিন্তু বিজেপির প্রশাসনিক নীতিতে তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অন্যদিকে, বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে যাদবপুরে নকশাল চর্চাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।
শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভের জেরে পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে, তিনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় একদল ছাত্র আহত হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাম ছাত্র সংগঠন SFI ও DSO।
এই প্রেক্ষাপটে, যাদবপুরে চরমপন্থী রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘জনগণ যদি বিজেপিকে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব দেয়, তাহলে যাদবপুরকে গুছিয়ে আনতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে না। আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। একই পদ্ধতি প্রয়োগ করলে যাদবপুরেও দ্রুত পরিবর্তন আসবে।’
শুভেন্দুর বক্তব্যের রেশ ধরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক সংগঠন রয়েছে, যারা দেশের শাসনব্যবস্থা মানতে চায় না, সংবিধানের ওপর আস্থা রাখে না। এই সমস্ত নকশাল গোষ্ঠীকে তৃণমূল কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে রক্ষা করে চলেছে। কিন্তু বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে ২০২৬ সালের পর এদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা ইতিমধ্যে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এদের সরিয়ে দিয়েছি। এক সময় ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছিল নকশালপন্থীদের দুর্গ, কিন্তু এখন সেখানে তাদের অস্তিত্ব নেই। বিজেপিই একমাত্র শক্তি, যারা এদের বিরুদ্ধে লড়তে পারে।’
এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলগুলির দাবি, বিজেপি শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতে চাইছে, যা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। তবে বিজেপি নেতাদের মতে, ছাত্রদের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য।
Leave a comment
Leave a comment