বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে সোমবার সন্ধ্যায় নার্সদের দ্বারা প্রসূতিদের দেওয়া ইঞ্জেকশনের পর ১০ থেকে ১২ জন প্রসূতি অস্বস্তি অনুভব করেন। অভিযোগ, ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই প্রসূতিরা চরম খিঁচুনি এবং অতিরিক্ত জ্বরে ভোগেন। এই ঘটনাটি নিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।
জানা গেছে, নার্সরা সন্ধ্যায় প্রায় চারটি ইঞ্জেকশন একসাথে প্রসূতিদের শরীরে দেন। এর পরেই রোগীরা শারীরিকভাবে অসুস্থ হতে শুরু করেন। কয়েকজন প্রসূতি পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, খালি পেটে একাধিক ইঞ্জেকশন দেওয়ার ফলে তাদের শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। “কাঁপুনি এবং জ্বর এসেছে। সবার শরীরে খিঁচুনি দেখা দিয়েছে। এই ঘটনার পর আমরা ভয় পেয়ে গেছি,” বলেন এক রোগীর স্বামী সুমন দাস।
অন্য একজন রোগীর পরিবারের সদস্য জয়দেব মণ্ডল বলেন, “আমার স্ত্রী সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। হঠাৎ ফোনে খবর পাই, যে তার শরীরে খিঁচুনি হচ্ছে এবং জ্বর উঠেছে। নার্সরা ইঞ্জেকশন দেয়ার পর এমনটা ঘটেছে। এরপর আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখি, সিকিউরিটি আমাকে বাইরে বের করে দিয়েছে। এখন যদি কিছু হয়ে যায়, তবে এর দায় কে নেবে?”
এই ঘটনার পর, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর কিছু সমস্যা হয়েছিল, তবে পরিস্থিতি তাড়াতাড়ি সামলানো হয়েছে। বর্তমানে পাঁচ-ছ’জন প্রসূতি এখনও অসুস্থ রয়েছেন। তবে আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রসূতিদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, নার্সরা প্রশিক্ষিত না হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। খালি পেটে একাধিক ইঞ্জেকশন দেওয়া প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থা আরও জটিল করে তুলেছে। বর্তমানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে এই বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে, তবে এখনও পর্যন্ত কোনো সরকারি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনাটি গোটা বর্ধমান শহর এবং আশপাশের এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। আগের বিষাক্ত স্যালাইন কাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই এই ঘটনা আবার নতুন করে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।