বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেনের জুটি অনন্য। তবে, ঋত্বিক ঘটক, যিনি বাংলা চলচ্চিত্রের এক অন্যতম মহা পরিচালক, কখনই সুচিত্রা সেনকে মহানায়িকা হিসেবে মানতেন না। সুচিত্রা সেনের প্রতি ঋত্বিকের এই বিশেষ মনোভাবটি সম্প্রতি এক অভাবনীয় গল্পের মাধ্যমে সামনে এসেছে।
ঋত্বিক ঘটক তখন তার জীবনের শেষ দিনগুলো কাটাচ্ছিলেন। তিনি হাসপাতালের শয্যায় শয্যাশায়ী। শরীর ছিল বিধ্বস্ত, মদ্যপানের কারণে জীর্ণকায়। এই সময়েই সুচিত্রা সেন নিয়মিত তাকে দেখতে আসতেন, নানা ফল নিয়ে আসতেন এবং ঋত্বিকের সাথে গল্পও করতেন। একদিন, শয্যায় শুয়ে থাকা ঋত্বিক অল্প গলায় সুচিত্রাকে ডাকেন। ধীরে ধীরে বললেন, “তোমাকে এই বিশ্ব মহানায়িকা ভাবেন, কিন্তু আমি তোমায় মহানায়িকা মনে করি না।” ঋত্বিকের এই কথা শুনে সুচিত্রা চমকে ওঠেন। কিন্তু ঋত্বিক থামেননি, বরং আরও বলেন, “তুমি যেভাবে আমার কাছে এসো, তা কোনও মহানায়িকা করবে না। তুমি আমার কাছে দেবী মায়ের মতো।”
ঋত্বিকের মুখে এমন কথা শুনে সুচিত্রা সেন কেঁদে ফেলেছিলেন। ঋত্বিকের অমায়িকতা, তার গভীর সম্পর্ক এবং সহানুভূতি এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যদিও সুচিত্রাকে মহানায়িকা হিসেবে বাংলা চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে, ঋত্বিক তাকে নিজের চোখে একজন দেবী, একজন অনন্য আত্মা হিসেবে দেখতেন। এই একাগ্রতা, সহানুভূতি এবং বন্ধুত্বের গল্প সুচিত্রা সেনের ভক্তদের কাছে এক নতুন রূপে আবির্ভূত হয়।
এতসবের পরও, ঋত্বিক এবং সুচিত্রার এই সম্পর্ক বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এক অমর গল্প হয়ে থাকবে, যা একসময় প্রকাশিত হয় ম্যাগাজিনে।