যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনের উত্তাপের মাঝেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান অস্থিরতা এবং ছাত্রদের ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মধ্যে মঙ্গলবার উপাচার্যের শরীর আরও খারাপ হতে থাকে। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কয়েকদিন ধরেই তিনি অসুস্থতায় ভুগছিলেন, তবে মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ করেই তাঁর রক্তচাপ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছায়, যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।
চিকিৎসকদের মতে, উপাচার্যের রক্তচাপ ১৭০/৯০ পর্যন্ত উঠে যায়, যা উদ্বেগজনক। অতীতে তিনি একবার সেরিব্রাল অ্যাটাকের শিকার হয়েছিলেন, ফলে নতুন করে কোনো জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখতে ওষুধ দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি, যার কারণে শেষমেশ হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভাস্কর গুপ্তের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানান, ‘‘উপাচার্যের রক্তচাপ বারবার ওঠানামা করছে, ওষুধেও তা নিয়ন্ত্রণে আসছে না। অতীতের অসুস্থতা মাথায় রেখে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাতে কোনও গুরুতর সমস্যা এড়ানো যায়।’’
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবি, উপাচার্যকে অবশ্যই তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। তাঁরা মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপাচার্য আলোচনায় না এলে আন্দোলনের মাত্রা আরও তীব্র হবে। তবে হাসপাতাল থেকে উপাচার্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরবেন।
এই পরিস্থিতির সূত্রপাত হয়েছিল শনিবারের এক উত্তপ্ত ঘটনায়। সেদিন আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন উপাচার্য। অভিযোগ, সেখানে উপস্থিত একদল ছাত্র তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে যে তাঁর জামাকাপড় ছিঁড়ে যায় বলে জানা গেছে। এরপর থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অস্থিরতার কেন্দ্রে রয়েছে শনিবারের এক বিতর্কিত ঘটনা, যেখানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ঘিরে ছাত্রদের বিক্ষোভ হয়। অভিযোগ, সেই সময় মন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় দু’জন পড়ুয়া আহত হন। একজনের পায়ের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে যায়, অন্যজন গুরুতর আঘাত পান। এই ঘটনার পর থেকেই যাদবপুর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যার রেশ এখনও কাটেনি।
Leave a comment
Leave a comment