২৬/১১ মুম্বাই হামলার অভিযুক্ত তাহাউর রানার আবেদন খারিজ করল মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। রানা তাঁর আবেদনে বলেছিলেন যে, তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা উচিত নয়। প্রত্যর্পণ স্থগিত করার জন্য আদালতে একটি জরুরি আপিল দায়ের করেছিলেন তাহাউর রানা। সেই আবেদন আদালত খারিজ করে দেয়। তাঁর আবেদনে বলেছিলেন যে, পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম হওয়ার কারণে তাঁকে ভারতে নির্যাতন করা হবে। তাহাউর রানা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক। তাঁর বিরুদ্ধে মুম্বাই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। সে ভারতে বর্তমানে মোস্ট ওয়ান্টেড।
তাহাউর রানাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন সরকার। এই সিদ্ধান্ত বন্ধে আদালতের স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন তাহাউর। সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা তাঁর আবেদনে রানা যুক্তি দেন যে, তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া মার্কিন আইন এবং জাতিসংঘের নির্যাতন বিরোধী কনভেনশনের লঙ্ঘন। আবেদনে বলা হয়েছে, মুম্বাই হামলার একজন অভিযুক্ত এবং পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম হওয়ায়, ভারতে তবে উপর নির্যাতনের ঝুঁকি আরও বেশি।
আদালতে তাঁর গুরুতর অসুস্থতার কথাও উল্লেখ করেছিলেন তাহাউর রানা। তিনি জানান, তিনি পারকিনসন রোগ, মূত্রাশয় ক্যান্সার, কিডনি রোগ এবং হাঁপানিতে ভুগছেন। তাঁকে বেশ কয়েকবার কোভিড-১৯ সংক্রমণের সাথেও লড়াই করতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া উচিত নয়। অসুস্থতা এবং ভারতীয় কারাগারের খারাপ অবস্থার কারণে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতের মুম্বাইয়ে মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলা ঘটে। এই আক্রমণে ভারত রানাকে খুঁজছে। ৬৪ বছর বয়সী রানা পাকিস্তানি-আমেরিকান সন্ত্রাসী ডেভিড কোলম্যান হেডলির সহযোগী বলে জানা গেছে। হেডলি ২৬/১১ হামলার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন। ২৬/১১ হামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের অভিযোগও রয়েছে রানার বিরুদ্ধে।
রানার আবেদন প্রত্যাখ্যানের পর, তাঁকে ভারতে প্রত্যর্পণের পথ এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে। তবে তাঁর ফিরে আসার তারিখ এখনও নিশ্চিত হয়নি। আশা করা হচ্ছে যে তিনি শীঘ্রই ভারতে আসতে পারেন। ভারত সরকার দীর্ঘদিন ধরে রানার প্রত্যর্পণের দাবি জানিয়ে আসছিল। ভারতে আসার পর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।