আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রেক্ষাপটে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব হলো বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে নারীরা ক্রমাগত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, যা সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
শনিবার এক অনুষ্ঠানে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেন তিনি। তার বক্তব্য, নারীদের নিরাপত্তা এখন চরম সংকটে। তিনি বলেন, “আজ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নারীরা প্রতিনিয়ত হেনস্তার শিকার হচ্ছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে গণপরিবহন—কোথাও তারা নিরাপদ নন। এটি সমাজের জন্য এক বিপজ্জনক সংকেত। পরিকল্পিতভাবে দেশে অরাজকতা তৈরি করে অস্থিরতা বাড়ানো হচ্ছে, যা নারী স্বাধীনতার পথ রুদ্ধ করছে।”
সরকারের ভূমিকার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব, কিন্তু বাস্তবে তা উপেক্ষিত হচ্ছে। নারীদের প্রতি সহিংসতা দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার বদলে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতিসৌধে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা নিয়ে সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন ফখরুল। তিনি সে সময় অভিযোগ তুলেছিলেন যে, প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই দুষ্কৃতীরা এমন নাশকতা ঘটানোর সুযোগ পেয়েছে, যা সরকারের ব্যর্থতারই প্রমাণ।
এবার নারী দিবসেও একই অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “এই সরকার অপরাধীদের দমন করতে পারেনি। বরং তাদের বিচার না হওয়ায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।”
এদিন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনাও করেন তিনি। তার ভাষ্য, পূর্বের শাসকগোষ্ঠী নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি, যার ফলে এ সমস্যা আরও গভীর হয়েছে। তিনি বলেন, “বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশে নারী নির্যাতন বাড়িয়ে তুলেছে। আজও সেই একই অবস্থা চলছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে সরকারের ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দাবি করেছেন ফখরুল। নারী স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।
Leave a comment
Leave a comment