সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
রাজ্য সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর গুলির বাজেট গিলোটিনে পাঠিয়েই আগামীকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় শুরু হচ্ছে বাজেট অধিবেশনে দ্বিতীয় দফা। দফা বাড়ি বাজে ট আলোচনার এই অধিবেশন চলবে আগামী ১৯ মার্চ পর্যন্ত। সরকারি সূত্রে জানা গেছে মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে থাকা স্বরাষ্ট্র-স্বাস্থ্য সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দপ্তরের বাজেট গিলোটিনে পাঠাতে চায় নবান্ন। এই দপ্তর গুলো নিয়ে বিরোধীরা আলোচনার বারবার দাবি জানালেও দফাবারি চলতি অধিবেশনে এই দপ্তরের বাজেট আলোচনা বিষয় নিয়ে বিজনেস অ্যাডভাইজারি কমিটিতে কোন আলোচনায় হয়নি। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে শ্রম, বিদ্যুৎ, পঞ্চায়েত গ্রাম উন্নয়ন, নগর উন্নয়ন এই দস্তর গুলির বাজেট আলোচনা হবে আসন্ন অধিবেশনে। কেন জরুরী দফতর গুলোর বাজেট নিয়ে আলোচনা নয়? প্রশ্নের উত্তরে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সরকার যে দপ্তর গুলি নিয়ে আলোচনা চাইছে সেই দপ্তর গুলি অধিবেশনে আলোচনার জন্য স্থির করা হয়েছে। বিমানবাবুর যুক্তি ” লোকসভাতেও আমরা দেখেছি একটা দুটো দপ্তরের বেশি আলোচনা হয় না। বিধানসভাতে তো আমরা বেশ কিছু দপ্তরের গুরুত্ব বুঝে আলোচনা করছি।”
উল্লেখযোগ্য যে, আগামীকাল সকাল ১১ টায় প্রয়াত সংগীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রতি শোকবার্তা জানিয়ে শুরু হবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব। শোক প্রস্তাবের পর আগামীকাল কোন মেনশন বা উল্লেখ পর্ব থাকবে না বিধানসভায়। এরপরেই বাজেট আলোচনার অধিবেশন শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শ্রম দপ্তরের বাজেট আলোচনা হবে ১১ই মার্চ যার জন্য দু’ঘণ্টা সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। 12ই মার্চ বিদ্যুৎ দপ্তরের বাজেট আলোচনা হবে যার জন্য সময় বরাদ্দ দু ঘন্টা। আড়াই ঘণ্টা সময় বরাদ্দ করে পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের বাজেট আলোচনা হবে আগামী ১৩ মার্চ। মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী আসন্ন এই বাজেট অধিবেশনের প্রতিদিনের কার্যকাল বিকেল চারটের মধ্যে শেষ করা হবে। রমজান মাস উপলক্ষে এই বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিধানসভার কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে।
বলে রাখা প্রয়োজন দফাওয়াড়ি এই বাজেট আলোচনার অধিবেশনে হাজির থাকতে পারবেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল সহ আরো দুই বিজেপি বিধায়ক এই অধিবেশনে হাজির থাকতে পারবেন না। কারণ ইতিমধ্যেই এই চারজনের বিরুদ্ধে অধ্যক্ষের নির্দেশে এক মাসের সাসপেনশন জারি করেছে রাজ্য বিধানসভা। আগামী ১৯ মার্চ পর্যন্ত রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে তারা অংশ নিতে পারবেন না। এমতাবস্থায় এই দফাওয়াড়ি বাজেট আলোচনার অধিবেশনে বিরোধীপক্ষ কতটা অংশগ্রহণ করবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েই গেছে। উল্লেখযোগ্য, গত 12 ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় 2025-26 আর্থিক বছরের ৩.৮৯ লক্ষ কোটি টাকার রাজ্য বাজেট পেশ করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে এই বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে রাজ্যপালের ভাসনের উপর আলোচনায় অংশ নিয়েছিল শাসক-বিরোধী দুপক্ষ। এবার দ্বিতীয় পর্বে সরকারি দপ্তর গুলির দফামারি বাজেট আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।