শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাটে এবার বসন্ত উৎসব হচ্ছে না। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অতিরিক্ত ভিড় ও নিরাপত্তাজনিত কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমার আগে এবং পরে শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব দেখতে ভিড় জমান অসংখ্য পর্যটক। এই উৎসব শান্তিনিকেতনের অন্যতম ঐতিহ্য। রঙের উচ্ছ্বাস, নাচ, গান আর উৎসবের আমেজে ভরে ওঠে গোটা এলাকা। বসন্ত উৎসবকে ঘিরে ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় মানুষদের মধ্যে এক বিশেষ উন্মাদনা দেখা যায়।
সোনাঝুরি হাটে বসন্ত উৎসব উপলক্ষে হস্তশিল্প ও বিভিন্ন সামগ্রীর বিক্রি বেড়ে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, বসন্ত উৎসব চলাকালীন তাদের ব্যবসায় বিপুল পরিমাণ লাভ হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এই উৎসবে যোগ দিতে আসেন। তবে এবার প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় সেই উৎসব বাতিল হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘উৎসব ঘিরে অতিরিক্ত ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নিরাপত্তা রক্ষা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে অপ্রিয় পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’’ এই সিদ্ধান্তে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের একাংশ বলছেন, বসন্ত উৎসবই তাদের বছরের সেরা বিক্রির সুযোগ এনে দেয়। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘প্রতি বছর বসন্ত উৎসবে আমরা প্রচুর বিক্রি করি। এবার উৎসব বন্ধ থাকলে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়ব।’’
বসন্ত উৎসব বন্ধ থাকায় শুধু ব্যবসায়ীরাই নয়, পর্যটকরাও হতাশ। অনেকে আগেই হোটেল বুকিং করে রেখেছিলেন। বসন্ত উৎসব বাতিলের খবরে পর্যটকদের একাংশ ইতিমধ্যেই বুকিং বাতিল করেছেন। শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম প্রতীক। এই উৎসব শুধুমাত্র ব্যবসা নয়, স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। এবার সেই উৎসব বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী এবং পর্যটক—দুই পক্ষই মনখারাপ নিয়ে ফিরছেন।