বসন্ত এসে গেছে আকাশে বাতাসে। আর সেই বসন্তের রঙিন দিনে ঘাসফুলের হাওয়ায় পাপড়ি ছিঁড়ল পদ্ম ফুলের। সত্যিই অসাধারণ এই রাজনীতির পাঠশালায় একবার এদিক আর একবার ওদিক। রাজনৈতিক নেতাদের দলবদলের প্রবণতা বৃদ্ধি পায় ভোট এলেই। এক দল ছেড়ে অন্য দলে বিধায়ককে হাইজ্যাক করে নিয়ে যাওয়া হয় নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে। সেটাই এখন বাংলার সুস্থির রাজনীতির অস্থির একটা ছবি। যে ছবি ফুটে উঠল আজ ফের। সরাসরি রাজ্যের ডাকাবুকো বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দুর্গে ভাঙন ধরালো তৃণমূল কংগ্রেস। ঠিক ভোটের এক বছর আগেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস দলে যোগ দিলেন হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। মা মাটি মানুষের দলে যোগ দেওয়া তাঁর হাসি মুখে। শুধুই একটু কাজ করবেন বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আর হাতে হাত মিলিয়ে এতদিন যেটা কিছুতেই করা সম্ভব হয় নি তাঁর গেরুয়া রাজনীতি করে। সেকথাই বললেন তিনি সাংবাদিক বৈঠকে। তিনি জানালেন একটা সুন্দর বাংলা তৈরি করবেন তিনি। যা তিনি এতদিন ওই দলে থেকে করতে পারেন নি। বাংলার এই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে চান তিনি। আর তাই তাঁর এই দল বদলের সিদ্ধান্ত। যদিও এই প্রসঙ্গে বিজেপির তরফে কিছুই জানা যায়নি। কিন্তু এই যে খেলা শুরুর আগেই বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়কে মাঠ থেকে তুলে নিয়ে নিজের দলে যোগ দেওয়া করানো এটা বেশ ভালো স্ট্র্যাটেজি কিন্তু। আর সেই খেলোয়াড় যদি হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিজের এলাকার মাঠ হয় তাহলে তো। কথাই নেই। আর কার্যত নির্বাচনের এক বছর আগে সেটাই করে দেখালো রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিছুটা চাপে ফেলে দিলো বিজেপিকে। তৃণমূল কংগ্রেস এর পার্টি অফিসে বসে এই উজ্জ্বল দলবদলের ছবি দেখে দিল্লির ও রাজ্যের গেরুয়া রাজনীতি করা নেতারা কিছুটা হলেও চিন্তায় রইলেন। তাঁদের কাছে এখন ঘর ছেড়ে চেনা সংসার চলে যাওয়া নেতাদের আটকে নিজের ঘরে রাখাই বড়ো চ্যালেঞ্জ। না হলে ভোটের আগেই এইভাবে ঘর থাকলে স্নায়ু যুদ্ধে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়বে বিজেপি। আর হাসিমুখে কিস্তিমাত করে এগিয়ে যাবে ঘাস ফুলের দল তৃণমূল। ভোটের আগে ঠিক সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলতে শুরু করলো শাসক দল তৃণমূল। বিরোধীদল বিজেপি এই ধাক্কা সামলে নিয়ে কতটা তেড়েফুঁড়ে লড়াই এর মাঠে নামতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়।