এ বলে আমায় দেখ তো অন্য জন বলে আমায় দেখ।একদম ঠিক খেলার মাঠে নেমে এক গোল খেয়ে গোল শোধ করে উচ্ছাস দেখানো অন্য পক্ষের। একদম রাজনীতির ময়দানে যেনো ইস্টবেঙ্গল আর মোহন বাগানের দ্বৈরথ যুদ্ধ। কে জিতবে কে হারবে সেই নিয়েই জোর লড়াই চলছে দু পক্ষের। কেউ বলেন এটা লোক দেখানো ঘরের লড়াই। আবার কেউ বলেন পুরোনোদের দিন শেষ এইবার সব নতুন প্রজন্মের পালা শুরু হবে। তাঁদের হাতেই থাকবে এই ভুবনের ভার না হলেও, এই রাজ্যের ভার তো বটেই। আর সেই নিয়েই এখন তৃণমূলের অন্দরে জোর জোয়ার বইছে সর্বত্র। যে জোয়ারে ভেসে যাচ্ছেন দলের ছোটো, বড়ো, মেজো,সেজো নানা মাপের নেতারা। দলের বিধায়ক থেকে সাংসদ দলের পুরপ্রধান থেকে কলকাতা কর্পোরেশন এর মেয়র আর কর্পোরেশন এর সব সদস্যকেই হাজির থাকতে হবে শনিবারের এই মহা ভার্চুয়াল বৈঠকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতাজী ইনডোরে মেগা বৈঠকের পর অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এর এইবার এই ভার্চুয়াল বৈঠক। যে বৈঠক সুব্রত বক্সীর পৌরোহিত্যে গত সপ্তাহে তৃণমূল ভবনে প্রথম বৈঠকে বসেছিল ভোটার তালিকা সংক্রান্ত ওই কমিটি। কিন্তু সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। সে দিনই বৈঠকের শেষে বলা হয়েছিল, অভিষেক ১৫ মার্চ ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন। সেই মোতাবেক তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হয়ে এই বৈঠকের ডাক দেন। তৃণমূল সূত্রে জানা যায় প্রথমে ঠিক ছিল এই অভিষেকের বৈঠকে থাকবেন ভোটার
তালিকা সংক্রান্ত কমিটির ৩৫ জন সদস্য, সমস্ত জেলা সভাপতি এবং সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যানেরা। পরে সেই তালিকায় যুক্ত করা হয় কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের। কিন্তু দোলের আগের দিন জানা গেল, তৃণমূলের পুরো রাজ্য কমিটি, সমস্ত বিধায়ক এবং সাংসদকেও ওই ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশিই থাকতে বলা হয়েছে জেলা পরিষদের সভাপতি, পুরসভার চেয়ারম্যান এবং পুরনিগম এলাকার কাউন্সিলরদেরও। উল্লেখ্য, ভোটার তালিকা সংক্রান্ত স্ক্রুটিনির বিষয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরের মহাসভা থেকে দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন। সেই কমিটিতে প্রথম নাম ছিল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর। দ্বিতীয় নাম ছিল অভিষেকের।
বক্সীর পৌরোহিত্যে গত সপ্তাহে তৃণমূল ভবনে প্রথম বৈঠকে বসে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত ওই কমিটি। কিন্তু সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না অভিষেক। সে দিনই বৈঠকের শেষ পর্বে বলা হয়েছিল, অভিষেক ১৫ মার্চ (শনিবার) ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন। পরে অবশ্য সেই তারিখ দু’বার বদল করা হয়। শেষমেশ ঠিক হয়, নির্ধারিত ১৫ তারিখেই বৈঠক হবে। কিন্তু তৃণমূলে কৌতূহল অন্য কারণে— কেন এত বড় করে পৃথক বৈঠক করতে হচ্ছে অভিষেককে? এই বৈঠক করার কারণ কী। তাহলে কী অন্য কোনো রাজনৈতিক হিসেব কাজ করছে। নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করে দেওয়া কমিটির উপর চাপ সৃষ্টি করে দেওয়া। নাকি নিজেদের ঘরের অন্দরে সদ্ভাব বজায় রেখে বাইরে একটা যুদ্ধের বাতাবরণ সৃষ্টি করে আগামী বিধানসভার ভোটে নবীন ও প্রবীণ দুই কর্মীদের চার্জড করে দেওয়া। যাতে দু পক্ষই ঝাঁপিয়ে পড়ে কাজ করেন এই ২০২৬ এর বিধানসভার ভোটে । তাতে আখেরে লাভ হবে দলের। যদি তেমন কোনোও সমস্যা থাকতো এই শনিবারের বৈঠক বন্ধের নির্দেশ দিতে পারতেন নেত্রী স্বয়ং। কিন্তু সেটাও দেননি দলের সর্বময় নেত্রী তাহলে কি এই বৈঠকে সায় আছে দলের নেত্রীরও। তিনিও ধীরে সুস্থে দলের সেকেন্ড ম্যানকে এইভাবেই দলের রাশ তাঁর হাতে তুলে দিতে চাইছেন। সেটা বলবে ভবিষ্যৎ। তবে তৃণমূলের রাজনীতির ভর কেন্দ্রে শুধুই একজন এর প্রভাব নয়। তাঁর প্রভাব যে আছে তাঁর ওজন আছে সেটা প্রমাণ করতেই এই বৈঠক এর ডাক দেওয়া তাঁর। এখন দেখার বিষয় এটাই কি বলেন তিনি কি বার্তা দেন তিনি শনিবারের বৈঠকে প্রবীণ আর নবীনদের। সেদিকেই তাকিয়ে এখন সবাই। তবে শেষ পর্যন্ত কী হয়, তার জন্য তৃণমূলের অপেক্ষা জারি থাকবে শনিবার পর্যন্ত। ফাগুনে কি হয় কি হয় সেই দিকেই তাকিয়ে গোটা বাংলা।