ভারতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভিন্নমত রয়েছে। কেউ মনে করেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণ রয়েছে, আবার অনেকের মতে, এই দেশ সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য নিরাপদ। বলিউড অভিনেতা জন আব্রাহাম এবার প্রকাশ্যে জানালেন তাঁর মতামত। তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন হলেও কখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেননি। বরং তাঁর অভিজ্ঞতা বলছে, ভারত এমন একটি দেশ, যেখানে তিনি সবচেয়ে বেশি স্বস্তি ও সুরক্ষা অনুভব করেন।
জনের পারিবারিক পটভূমিও যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়। তাঁর বাবা সিরিয়ান খ্রিস্টান, আর মা পার্সি ধর্মের অনুসারী। তবুও তিনি কখনও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে কোনও ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হননি বলে জানিয়েছেন।
বিভিন্ন ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে ওঠার পরও তিনি কখনও নিজেকে ভিন্ন বা বিচ্ছিন্ন মনে করেননি। বরং তিনি বিশ্বাস করেন, তিনি সবসময়ই দেশের মূলধারার অংশ।
তাঁর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, ভারত এমন এক দেশ যেখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করতে পারেন। একটি সাক্ষাৎকারে জন আব্রাহাম জানান, “শুধু অভিনেতা হওয়ার কারণে নয়, বরং একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আমি এই দেশে সম্পূর্ণ নিরাপদ ও স্বস্তিতে থাকি।”
তিনি আরও বলেন, “সংখ্যালঘু হওয়ার পরও কখনও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি, যেখানে মনে হয়েছে আমার নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে।”
ধর্মীয় পরিচয় প্রসঙ্গে জনের বক্তব্য, “আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় হলো আমি একজন ভারতীয়। আমি যদি এই দেশে সুরক্ষিত না থাকতাম, তাহলে এত বছর ধরে নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারতাম না। আমার বিশ্বাস, এখানে আমার সম্প্রদায়ের প্রতি কোনো বৈষম্য নেই।”
পার্সি সম্প্রদায় বরাবরই সৌহার্দ্য ও সহনশীলতার পক্ষে, আর ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে তাদের সম্পর্কও চিরকাল মধুর। জন জানান, তিনি দেশকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসেন, আর সেই আবেগের প্রতিফলন ঘটাতে প্রায়শই জাতীয় পতাকা সঙ্গে রাখেন। তাঁর মতে, “ভারতীয় পরিচয়ই আমার সবচেয়ে বড় গর্ব। “সবকিছুর আগে আমি ভারতীয়, এটাই আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়।”
জন আব্রাহামের পরবর্তী সিনেমা ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। ২০১৭ সালে পাকিস্তানে এক ভারতীয় নারী, উজ়মা আহমেদ, প্রতারণার শিকার হয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হন।
ভারতীয় কূটনীতিক জেপি সিংহের প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত তিনি দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হন। এই সাহসী কূটনীতিকের ভূমিকাতেই জন আব্রাহামকে দেখা যাবে সিনেমার পর্দায়।
Leave a comment
Leave a comment