দুবাইয়ের ফাইনালে যখন ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা, তখন হয়তো কারও ভাবনাতেও ছিল না যে খুব দ্রুতই দলের টেস্ট নেতৃত্ব নিয়ে চলা সব অনিশ্চয়তা শেষ হতে চলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের রোমাঞ্চ কাটতে না কাটতেই বোর্ড নিশ্চিত করে—ইংল্যান্ড সফরে টেস্ট দলের নেতৃত্ব রোহিতের হাতেই থাকছে।
গত কয়েক মাস ধরে তাঁর ভবিষ্যৎ অধিনায়কত্ব নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল, বিশেষ করে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির পর বিতর্ক চরমে পৌঁছেছিল। ফাইনালে রোহিতের বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে দেয়। বোর্ডও নিশ্চিত করেছে, আইপিএল চলাকালীন নেতৃত্ব নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকবে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফাইনাল চলাকালীনই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। রোহিত যখন কিউয়িদের বিপক্ষে স্পিনারদের সুচিন্তিতভাবে কাজে লাগাচ্ছিলেন, তখনই বোর্ড বুঝে নেয়—ইংল্যান্ড সফরের জন্য তিনিই সঠিক ব্যক্তি।
বোর্ডের মতে, ব্যাটসম্যানের বিকল্প অনেক থাকলেও, রোহিতের মতো কৌশলী অধিনায়ক নেই। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতাই তাঁকে এগিয়ে রাখে। ইংল্যান্ডের পিচকে পেসারদের স্বর্গরাজ্য বলা হলেও, সঠিক কৌশলে ব্যাটসম্যানরাও সেখানে বড় ইনিংস গড়তে সক্ষম।
তবে বাস্তবে দেখা যায়, শুরুর কয়েক ওভার সামলে নিতে পারলে ব্যাটসম্যানরা লম্বা ইনিংস গড়তে পারেন। ‘ড্যাডি হান্ড্রেডস’ শব্দটি ইংল্যান্ড থেকেই এসেছে, যা কিংবদন্তি গ্রাহাম গুচের দর্শনের অংশ ছিল। আলেস্টার কুক তার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই কৌশল দুর্দান্তভাবে আয়ত্ত করেছিলেন, যার খেসারত ভারত একাধিকবার দিতে বাধ্য হয়েছে।
ইংল্যান্ডের মাটিতে নেতৃত্ব দেওয়া সবসময়ই কঠিন পরীক্ষা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনি দুর্দান্ত অধিনায়ক হলেও, টেস্ট ফরম্যাটে ইংল্যান্ডে তাঁর সাফল্যের হার ছিল অত্যন্ত কম। তাঁর অধীনে ইংল্যান্ড সফরে নয়টি টেস্টের মধ্যে ভারতকে সাতবার পরাজয়ের স্বাদ নিতে হয়েছিল।
তবে এবার রোহিত শর্মার সামনে সুযোগ এসেছে এই ধারা বদলানোর। বিপক্ষের চাল বুঝে নেওয়া, স্পিনারদের কার্যকরীভাবে ব্যবহার করা এবং সংকটময় পরিস্থিতিতেও ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা সাজানো—এই তিনটি দিকেই তিনি বিশেষ পারদর্শী। ইংল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে এটাই ভারতের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে।
Leave a comment
Leave a comment