সরাসরি নয়, কিন্তু ঠারেঠোরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বুঝিয়ে দিলেন, ফুরফুরা শরিফে তাঁর এই সফর ঘিরে কোনওরকম রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজতে যাওয়া একদম অনুচিত কাজ। এটা নিয়ে অযথা জল ঘোলা করার মানে নেই একদম। সোমবার প্রায় এক দশক পর ফুরফুরা শরিফে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যেমন দোলে শুভেচ্ছা জানাই, তেমনই রমজানেও শুভেচ্ছা জানাই’। বস্তুত, সোমবারে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর ঘিরে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তরফে নানারকম মন্তব্য করা হয়েছিল। অনেকের মত ছিল, ভোটের আগে মূলত রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে সেখানে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ সামনের বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী, এমন অভিযোগ কংগ্রেস ও সিপিএমের। মঞ্চ থেকে নাম না করে পাল্টা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একপ্রকার প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন যেন। বললেন, দুর্গাপুজো বা কালীপুজোয় গেলে তো প্রশ্ন ওঠে না, প্রশ্ন ওঠে না কাশী বিশ্বনাথ, পুস্করে গেলে কেউ প্রশ্ন করেন না, কালী পুজোয় গেলে এই প্রশ্ন ওঠে না। মুখ্যমন্ত্রী সাফ বোঝালেন রাজ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখতে তিনি যে কোনও আপস করতে রাজি নন একদম। বলেন, ‘বাংলার মাটি সম্প্রীতির মাটি’। সকলের মঙ্গল কামনায় মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সকলের হয়ে দোয়া করছি। সম্প্রীতি, শান্তি, ঐক্য বজায় থাকুক। সবাই ভাল থাকুক’। তিনি বলেন আমি রোজা মাসে ফুরফুরায় এসেছি, আমি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে যাই, আমি পাঞ্জাবীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলে যাই। আমি সর্ব ধর্মের অনুষ্ঠানে যোগ দি। এটা হলো বাংলার সম্প্রীতির ছবি। দোলের পর এদিন ফুরফুরা শরিফে গিয়ে পীরজাদাদের সঙ্গে বৈঠক করার আগে তিনি সোজা আবু বকর সিদ্দিকীর মাজারে যান সেখানে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। উল্লেখ্য, মমতা ফুরফুরা শরিফে যাওয়ার আগেই বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন, এই সময়কালে সেখানে উন্নয়ন হয়েছে অঢেল। তবে আরও কিছু আবদার রয়েছে, জানিয়েছেন ফুরফুরার বাসিন্দা মহ: বাদশা। তিনি বলেছেন, ‘এখন আগের ফুরফুরা আর নেই। আপাদমস্তক বদলে গিয়েছে এলাকা। ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে ফুরফুরা শরীফে। যাঁরা বলছেন কোনও কাজ হয়নি, তারা সঠিক কথা বলছেন না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সক্রিয় উদ্যোগে ঢেলে সাজানো হয়েছে সমগ্র ফুরফুরা এলাকা। মূখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন একটি বাস স্ট্যান্ড ও একটি পলিটেকনিক কলেজ করা হবে এই এলাকায় যাতে স্থানীয় মানুষের উপকার হয়। পলিটেকনিক কলেজের নাম দেওয়া হবে আবু বকর সিদ্দিকীর নামে। অর্থাৎ মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাই বলুন তাঁর এই ফুরফুরা সফরকে ঘিরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত করলে হবে না। সেটা যে পুরোদস্তুর রাজনীতিতে জড়িত সেটাই পরিষ্কার হয়ে যায় নানা কাজের মধ্য দিয়ে। একদিকে যেমন মূখ্যমন্ত্রী ফুরফুরা শরীফে বিভিন্ন ধরনের ঢালাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এলাকার মানুষের মন রাখতে। ঠিক তিনি যেনো এদিন ভক্তবাঞ্ছা কল্পতরু হয়েছেন সবার সাথে ইফতারে যোগ দিয়ে। কারণ একটাই রাত পোহালেই সামনের বছর যে বিধানসভা ভোট। আর তাই ফুরফুরার মঞ্চে দাঁড়িয়ে মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় প্রয়াত সাংসদ আকবর আলি খন্দকার এর নাম। তিনি বলেন, আমি আকবর এর সাথে এর আগে ১৫ -১৬ বার এসেছি এই এলাকায়।