মহাকাশ থেকে দুই নভোচারীর সফল প্রত্যাবর্তনের কৃতিত্ব নিজের হাতে তুলে নিলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নভোচারীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প জোর দিয়ে বললেন, এই সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে তাঁর দৃঢ় পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা।
অভিযানের সফল সমাপ্তির পর তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “আমি প্রতিশ্রুতি দিলে তা পূরণ করি!” পাশাপাশি, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করে কটাক্ষ করতেও ভোলেননি তিনি।
টানা নয় মাস মহাকাশে আটকে থাকার পর অবশেষে পৃথিবীর মাটিতে ফিরলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোচারী সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। বুধবার (ভারতীয় সময় ভোর ৩:২৭), ফ্লোরিডার সমুদ্র উপকূলে স্পেসএক্সের মহাকাশযান নিরাপদে অবতরণ করে, যা সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটায়।
এই গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের সাফল্যের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের কৃতিত্ব দাবি করে বলেন, উদ্ধার পরিকল্পনাটি তাঁর উদ্যোগেই সম্ভব হয়েছে এবং তাঁর নির্দেশেই এই অভিযান বাস্তবায়িত হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের সরকারি এক্স (টুইটার) পোস্টে জানানো হয়, “ন’মাস মহাকাশে আটকে থাকার পর শেষ পর্যন্ত সুনীতাদের সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, এবং সেটাই রক্ষা করা হয়েছে।”
প্রতিশ্রুতি ছিল, সেটা রক্ষা করা হয়েছে।” একইসঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলে ট্রাম্প বলেন, “বাইডেন ব্যর্থ হয়েছেন ওঁদের ফিরিয়ে আনতে। “আমি ইলন মাস্ককে বলেছিলাম এই কাজটি করতে, এবং এখন দেখুন—তাঁরা নিরাপদে ফিরে এসেছেন! সুস্থ হয়ে উঠলেই তাঁদের ওভাল অফিসে আমন্ত্রণ জানানো হবে।”
২০২৪ সালের ৫ জুন বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযান আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে নিয়ে। মাত্র আট দিনের অভিযানের পরিকল্পনা থাকলেও, যান্ত্রিক জটিলতার কারণে তাঁরা মহাকাশে দীর্ঘ ৯ মাস আটকে পড়েন। তাঁদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা একাধিকবার ব্যর্থ হলেও, অবশেষে স্পেসএক্সের ‘ড্রাগন’ ক্যাপসুলের সাহায্যে সফলভাবে এই অভিযান সম্পন্ন হয়।
অবতরণের পর, সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবা দেওয়া হচ্ছে, যাতে তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে দ্রুত ফিরে আসতে পারেন।
এদিকে, তাঁদের সফল প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি দাবি করেছেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরই এই উদ্ধার মিশনের পরিকল্পনা করি। কথা দিয়েছিলাম, কথা রেখেছি!” তাঁর মতে, বাইডেন প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই এতদিন নভোচারীদের ফেরানো সম্ভব হয়নি। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, তাঁর সক্রিয় উদ্যোগ ও সিদ্ধান্তের কারণেই এই জটিল উদ্ধার অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে, যার ফলে দুই নভোচারী নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন।
এই ঘটনা শুধু মহাকাশ গবেষণার সাফল্য নয়, বরং রাজনৈতিক মহলেও তুমুল চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। এখন প্রশ্ন, ট্রাম্পের এই দাবির জবাবে বাইডেন কী প্রতিক্রিয়া দেন!
Leave a comment
Leave a comment