পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি বিরোধী দলগুলিকে তীব্র বার্তা দিয়েছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণকে স্বাগত জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “বিরোধীরা বারবার রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষ সবই বোঝে। সত্যকে চেপে রাখা যায় না।”
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে উল্লেখ করেছে যে, গণতন্ত্র রক্ষা করা এবং সাধারণ মানুষের অধিকার সুরক্ষিত রাখা সরকারের দায়িত্ব। এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ প্রমাণ করেছে যে, আমরা যে পথে চলছি, তা সঠিক। আমাদের সরকার সবসময় মানুষের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের সরকার সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছে। সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান— সবক্ষেত্রেই আমরা জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছি। অথচ বিরোধীরা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু মানুষ সব বোঝে।”
এদিনের জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্যের কথাও উল্লেখ করেন। তার দাবি, “দুয়ারে সরকার” প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষ সরাসরি উপকৃত হয়েছেন। এছাড়া স্বাস্থ্যসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, এবং লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে।
বিরোধীদের প্রতি কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে, তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিক। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ শান্তি চায়, উন্নয়ন চায়। যারা এই শান্তি নষ্ট করতে চাইছে, তাদের মানুষ কখনও ক্ষমা করবে না।”
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, গণতন্ত্র রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব। এই পর্যবেক্ষণ আমাদের পথ চলায় সাহস জোগাবে। আমরা সবসময় মানুষের পাশে আছি এবং থাকব।”
রাজনৈতিক মহলে মমতার এই বক্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি যেখানে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং প্রশাসনিক কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে বিরোধী দলগুলি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে কটাক্ষ করে বলেছে, “সরকার নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে আদালতের পর্যবেক্ষণের আশ্রয় নিচ্ছে। প্রকৃত অর্থে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে, সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।”
এমন পরিস্থিতিতে মমতার এই কড়া বার্তার পর রাজনৈতিক উত্তাপ যে আরও বাড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।