মিশরের গিজায় পিরামিডের নিচে বিশাল ভূগর্ভস্থ কাঠামোর সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। সাম্প্রতিক রাডার স্ক্যান থেকে জানা গেছে, এই কাঠামো আসলে একটি প্রাচীন পাওয়ার গ্রিডের অংশ হতে পারে। এই আবিষ্কার প্রাচীন মিশরের সভ্যতা সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি খুলে দিয়েছে।
গিজার পিরামিড দীর্ঘদিন ধরেই ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার কেন্দ্রে রয়েছে। গবেষকরা রাডার প্রযুক্তির মাধ্যমে পিরামিডের নিচে একাধিক সুগঠিত চেম্বার এবং সংযোগকারী সুড়ঙ্গের সন্ধান পান। এই কাঠামোগুলি এতটাই জটিল এবং সুগঠিত যে, তা দেখে অনেকেই অনুমান করছেন এটি হয়তো বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনও প্রাচীন ব্যবস্থা হতে পারে।
গবেষকরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ কাঠামোর আকৃতি এবং বিন্যাস থেকে বোঝা যাচ্ছে যে এগুলি শুধু সমাধিক্ষেত্র নয়, বরং কোনও জটিল প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার অংশ হতে পারে। এর মধ্যে কিছু চেম্বারের দেয়ালে বিশেষ ধরনের পাথরের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, যা বিদ্যুৎ পরিবাহীর মতো আচরণ করতে পারে। এই পাথরগুলি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বা সংরক্ষণ করা হতো কিনা তা খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আবিষ্কার প্রাচীন মিশরের প্রযুক্তিগত দক্ষতা সম্পর্কে নতুন ধারণা দিচ্ছে। পিরামিডের নির্মাণশৈলী এবং ভূগর্ভস্থ কাঠামোর বিন্যাস দেখে মনে করা হচ্ছে, মিশরীয়রা বিদ্যুৎ উৎপাদন বা শক্তি সঞ্চয় সম্পর্কে গভীর জ্ঞান রাখতেন। তবে এই কাঠামোগুলি আসলে কী উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই ভূগর্ভস্থ কাঠামো খননের পরিকল্পনা করছেন। তারা আশা করছেন, এই খননের মাধ্যমে প্রাচীন মিশরের প্রযুক্তি এবং সভ্যতা সম্পর্কে নতুন তথ্য উঠে আসবে। গবেষকদের মতে, এই আবিষ্কার প্রাচীন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলির মধ্যে অন্যতম হতে পারে।
পিরামিড নির্মাণ এবং তার নীচে পাওয়া কাঠামোর মধ্যে সম্পর্ক কী, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন গবেষকরা। তবে এটি স্পষ্ট যে, মিশরের প্রাচীন সভ্যতা প্রযুক্তি এবং স্থাপত্যে অত্যন্ত উন্নত ছিল। এই আবিষ্কার শুধু ইতিহাস নয়, বিজ্ঞানের জগতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।