সিঙ্গুরে টাটার কারখানা আসার খবরে “জমি বাঁচাও” স্লোগানে গর্জে উঠেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আন্দোলনের ঝড়ে সিঙ্গুর ছাড়তে হয়েছিল টাটাকে, আর মমতার রাজনৈতিক আসন হয়ে উঠেছিল আরও শক্তিশালী। তবে কি সিঙ্গুরের সেই আন্দোলন মমতার রাজনীতিতে পাকাপোক্তভাবে প্রবেশের রাস্তা ছিল?
আজ, সেই মমতার শাসনেই বীরভূমের ডেউচা পাচামিতে কয়লাখনি প্রকল্পের দাবিতে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তারা বলছেন — আমরা শিল্প চাই, কাজ চাই! বাইরের কেউ এসে নাক গলালে তাড়িয়ে দেব। অথচ সিঙ্গুরের কৃষকরাও উন্নয়নের স্বপ্নে জমি ছেড়েছিলেন। তখন মমতার যুক্তি ছিল, শিল্পের নামে কৃষকদের সর্বনাশ হতে দেব না। তাহলে আজ শিল্পের নামে গ্রামবাসীদের উন্নয়নের স্বপ্নকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে কীভাবে?
সিঙ্গুরে শিল্পের বিরোধিতা আর ডেউচা পাচামিতে শিল্পের দাবি! মমতার এই দ্বৈত নীতি কি আদর্শের প্রশ্ন, নাকি রাজনৈতিক সুবিধার খেলা? সিঙ্গুর আন্দোলন মমতার রাজনৈতিক উত্থানের মোড় ঘুরিয়েছিল, আর আজকের ডেউচা পাচামির এই শিল্পপন্থী অবস্থান কি তার সেই অর্জনের পরিপন্থী?
সিঙ্গুর বনাম ডেউচা পাচামি! শিল্প মানে কি শুধু স্লোগান, আর আন্দোলন মানে শুধু মঞ্চের খেলা? মমতার এই নীতিগত ইউ-টার্ন রাজ্যের রাজনীতিতে আজ নতুন বিতর্কের ঝড় তুলেছে। সিঙ্গুরে শিল্প বিরোধী মুখ হয়ে ওঠা নেত্রী কি আজ ডেউচা পাচামির শিল্পপন্থী দাবিতে দ্বিধাগ্রস্ত? নাকি সিঙ্গুর আন্দোলন শুধুই ছিল রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে পা রাখার কৌশল?
বিরোধী নেত্রী হিসেবে যে আন্দোলন আর শিল্প বিরোধিতা করেছিলেন তিনি সরকারে থেকে সেই শিল্পের দাবিতেই পুলিশ প্রশাসন দলকে নামিয়ে যে ভাবেই হোক তাঁর স্বপ্নের এই উন্নয়নের প্রকল্পকে সফল করতে চাইছেন তিনি।