পরিতোষ সাহা:বীরভূম
দলনেত্রীর নির্দেশ না মেনে বীরভূম জেলায় দল পরিচালনা হচ্ছে,এমনই অভিযোগ করে গর্জে উঠেছিলেন,তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য ও বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ।নির্দেশ যে মানা হচ্ছে না, তা তিনি দলনেত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেও জানাবার কথা প্রকাশ্যে বলেন।এরপর,হঠাৎ করে জেলা কমিটির বৈঠক বাতিল করে শনিবার কোর কমিটির বৈঠক ডাকলেন আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী।
অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হবার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে বসেই গড়ে দিয়েছিলেন কোর কমিটি।সেই কমিটির একজন সদস্য করে দিয়েছিলেন দলনেত্রীই।সেই কমিটি ২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচন ও ২০২৪ লোকসভা নির্বাচন পরিচালনা করেছিল।তাতে বেশ ভালো ফল পায় তৃণমূল।সে জন্যই দলের সুপ্রিমো কোর কমিটি রেখে দেবার সিদ্ধান্ত নেয়।কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল জেল থেকে ফিরে আসার পর বিরোধ শুরু হয়।আর তা নিয়েই সরব হন কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ।
দলনেত্রীর নির্দেশ অনুসারে,জেলার তিনটি মহুকুমায় প্রতিমাসে একটি করে কোর কমিটি বৈঠক হবে।সেই বৈঠক হবার পর জেলা কমিটির বৈঠক বসবে।কিন্তু প্রথমে বোলপুর ও গত বছর ডিসেম্বরে রামপুরহাটে কোর কমিটির বৈঠক হলেও,তিনমাস পেরিয়ে গেলেও সিউড়িতে কোন কোর কমিটির বৈঠক বসেনি।আর তা না করে অনুব্রত মণ্ডল জেলা কমিটির বৈঠক ডাকেন।তাতেই ক্ষিপ্ত হন কাজল।রীতিমতো সাংবাদিক সন্মেলন করে তার ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেন।এমনকি সমস্ত কিছু দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবেন বলে জানান।এরপরই নড়েচড়ে বসে জেলার নেতারা।বাতিল করা হয় জেলা কমিটির বৈঠক।
তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে,এ নিয়ে গতকাল রাজ্য বিধানসভায় উপাধ্যক্ষ আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে,মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা,লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ও সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী হাজির হন।এই চার বিধায়ক দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন।সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জেলা কমিটির বৈঠক বাতিল করে শনিবার কোর কমিটির বৈঠক ডাকা হোক।সেইমত কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী শনিবার দুপুর তিনটের সময় বোলপুরের দলীয় অফিসে কোর কমিটির বৈঠক ডাকে।যদিও এর আগে বিকাশ রায় চৌধুরী বলেছিলেন,“কোর কমিটির চেয়ারম্যান জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।তিনি যখন ডাকবেন,তখন কোর কমিটির বৈঠক হবে।”
এদিকে,কোর কমিটি নাকি জেলা কমিটি কোন বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ। তা বুঝে উঠতে পারছেন না জেলা নীচু স্তরের তৃণমূল নেতারা।কাদের নির্দেশ তারা পালন করবেন? তাও তারা বুঝতে পারছেন না।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতার বক্তব্য,সামনেই বিধানসভা নির্বাচন।কিন্তু জেলার উঁচু তলার নেতাদের ইগোর লড়াইয়ের ফলে সংগঠন কিছুটা ঢিলেঢালা হচ্ছে।সঠিক নির্দেশ মিলছে না।ফলে অনেক কাজের খামতি দেখা যাচ্ছে।যা ছাব্বিশের নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে।