পকসো মামলার এই রায়কে কেন্দ্র করে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী প্রকাশ্যে এই রায়ের বিরোধিতা করে জানিয়েছেন, আদালতের এই সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। শুক্রবার তিনি সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এমন রায় সমাজে ভুল বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে এবং অপরাধীদের আরও সাহস জোগাতে পারে। তাঁর মতে, এই ধরনের সিদ্ধান্ত আইন ও ন্যায়বিচারের মৌলিক আদর্শের পরিপন্থী এবং এটি নারীদের সুরক্ষার প্রশ্নেও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জে এক কিশোরীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে দুই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা কিশোরীর বুকে হাত দেয় এবং পাজামার দড়ি খুলে ফেলে। স্থানীয় আদালতের আদেশ অনুযায়ী, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো আইনের আওতায় মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলাটি ইলাহাবাদ হাই কোর্টে পৌঁছায়। শুনানির সময়ে বিচারপতি রামমনোহর নারায়ণ মিশ্র জানান, এই ঘটনাকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের প্রচেষ্টা হিসেবে বিচার করা ঠিক হবে না। তাঁর মতে, কেবলমাত্র কারও শরীরে হাত দেওয়া বা পোশাকের কোনও অংশ সরানোর ভিত্তিতে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা যায় না। আদালতের মতে, ধর্ষণের অভিযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য আরও নির্দিষ্ট ও শক্তিশালী প্রমাণ প্রয়োজন।
অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা এক কিশোরীকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্জন স্থানে অসদাচরণের চেষ্টা করেছিল। তবে স্থানীয়রা ঘটনাটি লক্ষ্য করতেই তারা পালিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে ২০২১ সালে।
বিচারব্যবস্থার একাংশ মনে করছে, ইলাহাবাদ হাই কোর্টের এই রায় সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপের দাবিদার। বিশিষ্ট আইনজীবীদের মতে, দেশে যখন নারী নির্যাতনের ঘটনা ক্রমশ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন এমন রায় ন্যায়বিচারের পথ কঠিন করে তুলতে পারে এবং অপরাধীদের পক্ষে একপ্রকার রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করতে পারে।
Leave a comment
Leave a comment