নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্যের নামে এবার রেহাই দিল আদালত। ‘রাজসাক্ষী’ হওয়ার পর ইডির আর্জিতে অভিযুক্তের তালিকা থেকে তাঁর নাম সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত।
দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন পার্থের জামাই কল্যাণময়। ইডির চার্জশিটে উল্লেখ ছিল, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের টাকার কারবারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। এমনকি নিয়োগে অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে পাওয়া টাকা সামলানো এবং তা দিয়ে ‘ভুয়ো সংস্থা’ গড়ে তোলার অভিযোগও ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু সম্প্রতি আদালতে ‘রাজসাক্ষী’ হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন কল্যাণময়। ইডির বিশেষ আদালত সেই আর্জি মঞ্জুর করে। এরপর ইডি এবং তদন্তকারী অফিসারের পক্ষ থেকে তাঁর নাম অভিযুক্তের তালিকা থেকে সরানোর আবেদন করা হয়। সেই আবেদনেই সবুজ সংকেত দিল আদালত।
ইডির চার্জশিট অনুযায়ী, কল্যাণময় ছিলেন পার্থের কালো টাকা সাদা করার কারিগর। পার্থের স্ত্রীর নামে গড়া ‘বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’-এর অন্যতম ট্রাস্টি ছিলেন তিনি। অভিযোগ, ওই ট্রাস্টের নামে এক কোটি সতেরো লক্ষের বেশি ‘ডোনেশন’ তোলা হয়েছিল, যা আসলে নগদে নেওয়া টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া ছিল। এই টাকা দিয়েই কিনে নেওয়া হয়েছিল ১৫ কাঠা জমি।
এছাড়াও, ‘এইচআরআই ওয়েলথ ক্রিয়েশন রিয়েলটরস পাবলিক লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়ো সংস্থা তৈরি করে তার ডিরেক্টর পদে ছিলেন কল্যাণময়। তদন্তকারীদের দাবি, পার্থের কালো টাকা সাদা করার পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি সব জানতেন। কিন্তু ‘রাজসাক্ষী’ হওয়ার পর আদালতের নির্দেশে এবার তাঁর নাম সরিয়ে দেওয়া হল অভিযুক্তের তালিকা থেকে।
ইডি সূত্রে খবর, কল্যাণময়ের গোপন জবানবন্দি নিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। সেই বয়ানেই উঠে এসেছে বেশ কিছু গোপন তথ্য, যা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নতুন মোড় আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রস্তুত করতে কল্যাণময়ের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে ইডি।
এবার অভিযুক্তের তালিকা থেকে মুক্ত হয়ে কল্যাণময় নতুন করে জীবন শুরুর সুযোগ পেলেও, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার মূল অভিযুক্তদের উপর তদন্তের চাপ আরও বাড়ল।