বেলুড়ের পবিত্র প্রাঙ্গণ আবারও সাক্ষী রইল এক গৌরবময় অধ্যায়ের। সর্বভারতীয় স্তরের JAM (জয়েন্ট অ্যাডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্স) এবং GATE (গ্র্যাজুয়েট অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং) পরীক্ষায় অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের ছাত্ররা। পরিশ্রমের প্রতিটি বিন্দু যেন সোনা হয়ে ঝলসে উঠেছে ফলাফলে।
চলতি বছরের JAM পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২রা ফেব্রুয়ারি, যার দায়িত্বে ছিল আইআইটি দিল্লি। কম্পিউটারের মাধ্যমে আয়োজিত এই পরীক্ষায় দেশের বিভিন্ন আইআইটি, এনআইটি এবং আইআইআইটিতে স্নাতকোত্তর পড়ার স্বপ্নে পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। ফলাফল প্রকাশের পরেই বিদ্যামন্দিরের ছাত্রদের নাম উঠে আসে সাফল্যের শীর্ষে। রসায়নে সর্বভারতীয় স্তরে প্রথম স্থান অর্জন করে শুভন ঘোষ। একাদশ স্থানে সায়ন ধাড়া এবং তারপর ৫৪, ৬০, ৬৪, ৯২, ১১৩ এবং ১২৩ তম স্থানে বিদ্যামন্দিরের আরও কয়েকজন মেধাবী ছাত্র।
জীববিদ্যায় চতুর্থ স্থানে সোহম রাজ মাইতি এবং একাদশ স্থানে মনসিজ জ্যোতি তাদের দক্ষতার প্রমাণ রাখে। প্রিয়াংশু মিশ্র, রণদীপ দত্ত এবং সাগ্নিক রায়ের নামও উঠে আসে এই তালিকায়। পদার্থবিদ্যায় পঞ্চম স্থানে নীতীশ হালদার এবং গণিতে ৮৭তম স্থানে রিচিক সামন্তের সাফল্য সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
এদিকে GATE পরীক্ষায়ও বিদ্যামন্দিরের ছেলেরা দারুণ কৃতিত্ব অর্জন করেছে। মাইক্রোবায়োলজিতে প্রিয়াংশু মিশ্র চতুর্থ এবং মনসিজ জ্যোতি ২০তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রিতে ৭৫ তম স্থানে রয়েছে নিলয় মাইতি।
এই অসাধারণ সাফল্যে বিদ্যামন্দিরের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকরা আনন্দে আপ্লুত। তাদের মতে, ছাত্রদের নিষ্ঠা, অধ্যবসায় এবং সঠিক নির্দেশনার ফলেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে। বেলুড় মঠের আদর্শে দীক্ষিত এই পড়ুয়াদের সাফল্য শুধু বিদ্যামন্দিরের গর্ব নয়, গোটা বাংলার গর্ব।
বেলুড়ের গঙ্গার ঘাটে প্রতিদিনের প্রার্থনার ঘণ্টাধ্বনির সঙ্গে এবার যেন জুড়ে গেছে সাফল্যের উজ্জ্বল রূপকথা। এই সাফল্য প্রমাণ করে দেয়, সাধনার পথ পেরোলে সাফল্য হবেই।