সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আদালত ২৫ জন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, তবে শাস্তি এখনো কার্যকর হয়নি। এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য বৃহস্পতিবার সংসদে প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি, একদিনে তিন ভারতীয়ের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
সবার আগে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা শাহজাদি খানের মৃত্যুদণ্ডের খবর সামনে আসে। পরে জানা যায়, কেরলের মুহাম্মদ রিনাশ অরঙ্গিলোত্তু ও মুরলীধরন পেরামতত্ত ভেলাপ্পিলের ফাঁসিও কার্যকর করা হয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়জন ভারতীয় নাগরিক কারাগারে আটক রয়েছেন এবং তাঁদের মধ্যে কতজন মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায়, তা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন ওঠে। বিভিন্ন দেশের কারাগারে বন্দি ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ জানিয়েছেন, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন জেলে মোট ১০,১৫২ জন ভারতীয় নাগরিক আটক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এখনও বিচারাধীন অবস্থায় আছেন।
মন্ত্রী জানান, বিশ্বের আটটি দেশে ভারতীয় বন্দিদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভারতীয় বন্দি মৃত্যুদণ্ডের অপেক্ষায় রয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। বিভিন্ন দেশে ফাঁসির সাজা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন একাধিক ভারতীয় নাগরিক। সৌদি আরবে সর্বোচ্চ ১১ জন ভারতীয়ের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে। মালয়েশিয়ায় এই সংখ্যা ৬, কুয়েতে ৩। এছাড়া, ইন্দোনেশিয়া, কাতার, আমেরিকা ও ইয়েমেনে একজন করে ভারতীয় নাগরিক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন।
বিদেশে ভারতীয় নাগরিকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার ঘটনা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরব ও কুয়েতে গত পাঁচ বছরে বেশ কয়েকজন ভারতীয়র ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। ২০২৪ সালে এই দুই দেশে তিনজন করে মোট ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, আর ২০২৩ সালে সংখ্যাটি ছিল পাঁচ।
এদিকে, মালয়েশিয়া ও জিম্বাবোয়েতেও ভারতীয়দের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রশাসনের তরফে এ বিষয়ে কোনো সরাসরি তথ্য দেওয়া হয়নি। ভারতীয় দূতাবাসের মতে, গত পাঁচ বছরে সে দেশে কোনো ভারতীয়র মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি।
ভারত সরকার জানিয়েছে, বিদেশে বন্দি ভারতীয়দের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সংসদে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল ও প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, পাশাপাশি বন্দিদের সার্বিক সহযোগিতাও নিশ্চিত করা হচ্ছে।
Leave a comment
Leave a comment