চৈত্রের ঝড় বৃষ্টিতে দাবদাহ থেকে মুক্তি। দুদিনের টানা দৃষ্টিতে বাজ পড়ে মৃত ৩, আহত একাধিক
দিন চারেক আগেও দাবদাহে গলধঘর্ম অবস্থা হয়েছিল পুরুলিয়া বাসির। বৃহস্পতিবার থেকে পরিবর্তন হয় তাপমাত্রা মেঘলা আকাশ সাথে শুরু হয় জিজঝিরে বৃষ্টি বৃহস্পতি এবং শুক্র দুদিনের টানা বৃষ্টিতে তাপদাহ থেকে মিলেছে স্বস্তি। তাপমাত্রার পারদ যেখানে ৪০ ছুঁই ছুঁই হয়েছিল সে জায়গায় সপ্তাহ শেষে পারদ নেমে দাঁড়িয়েছে ২০ ডিগ্রীতে। শুক্রবারও রাতভর বৃষ্টি হয়েছে পুরুলিয়ায়। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারে দুই দিনের বজ্র বৃষ্টিতে বাজ পড়ে মারা গেছে তিনজন আহত একাধিক। সকাল থেকেও মেঘলা আবহাওয়া সাথে ঝিরঝিরি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে জেলায়। দুপুরের পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
গতকাল বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী পুরুলিয়া জেলায় বাজ পড়ে মারা গেছে ৩ জন। পুরুলিয়ার মানবাজার থানার কেঁন্দা ব্যেড়া গ্রামে অষ্টম নায়ায়ন দেব-৬৬, পাড়া থানার উদয়পুর গ্রামের আহমেদ আনসারী -৩২, ও বরাবাজার থানা এলাকার তেঁতুল ডি গ্রামের আনন্দ মাঝি-৪০ এর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। এদিন বরাবাজার থানার বাজড়া গ্রামে আবাস যোজনার বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছিল। মেঘলা আবহাওয়ার মাঝে হঠাৎ করেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি শুরু হয়। হঠাৎ বাজ পড়লে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন রাজমিস্ত্রি আনন্দ মাঝি সহ চারজন শ্রমিক। আনন্দ মাঝি কে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত চারজনের চিকিৎসা চলছে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আচমকা এই ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায় অন্যদিকে শুক্রবার দুপুর নাগাদ বৃষ্টি শুরু হতেই রঘুনাথপুর তিন নম্বর চক্রের গোসাইডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালযে বাজ পড়ে। ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের ডান হাতে বাজের ঝলকানি লেগে আহত হন। ঐ শিক্ষকের নাম শেখর মাজি। শেখর বাবু জানান বিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ করার সময় বাজ পড়ে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি শুরু হতেই বিদ্যালয়ের দরজা বন্ধ করতে যাই। সেই সেই সময়ই আচমকা বাজ পড়ে। আমার হাতে লাগ কিছুক্ষণের জন্য অসুবিধা হয় পরে চিকিৎসা করিয়ে এখন সুস্থ রয়েছি । তবে বিদ্যালয়ের বিদ্যুতের ওয়ারিং গুলি সব নষ্ট হয়ে যায়। তবে এ বিদ্যালয়ের বাজ পড়লো বরাত জোরে বেঁচে যায় খুদে পড়ুয়ারা। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে থাকা মিলন দে বলেন আমি ছুটিতে ছিলাম শিক্ষকদের কাছে জানতে পারি বিদ্যালয়ের এমন ঘটনা। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের কোন রূপ কিছু হয়নি। এমন ঘটনায় বিদ্যালয় বড় বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেল বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
হঠাৎ দাবদাহ হঠাৎ বৃষ্টি বৈচিত্র্যপূর্ণ আবহাওয়া পুরুলিয়ায়। দিন দুয়েক আগেও যখন দাবদাহের কারণে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল জেলায় তখন শুক্রবার এই চৈত্র মাসেও অনেককে দেখা গেল গরম পোশাকে।বৃষ্টির জেরে এক ধাক্কায় তাপমাত্রার পারদ ৩৯ ডিগ্রি থেকে নেমেছে ২১ডিগ্রির ঘরে। দাবদাহ থেকে স্বস্তি ,অনুভূত হচ্ছে ঠান্ডা।তাই চৈত্র মাসেও শীতের পোশাকে জেলাবাসী। বিষয়টি নিয়ে ঝালদার কিশোর কুমার গুপ্তা আবার এই খামখেয়ালি পনাকে কটাক্ষ করে বলেন। কখন গরম পড়বে? কখন বৃষ্টি হবে? কখন ঠান্ডা লাগবে বোঝা মুশকিল হচ্ছে। গরমে যখনই খালি গায়ে থাকতে হচ্ছে তখনই আবার বৃষ্টির কারণে শীতের জন্য চাদর, মাফলার,টুপি সোয়েটার নিতে হচ্ছে। এখন কোনটা কোন ঋতু বোঝা মুশকিল। তার জন্য হঠাৎ শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আবহাওয়া, সাথে ঝড়ো হওয়ায় ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে জেলায়। শুক্রবার দিনরাত একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে পুরুলিয়া জেলায় জুড়ে। দুপুর থেকে ছিল বজ্রগর্ভ মেঘ হঠাৎ হঠাৎ বজ্রের ঝলকানি এবং পর্যায় ক্রমে ঝড় বৃষ্টিতে নাজেহল দশা হয় জেলাবাসির। শনিবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল বৃষ্টি। তবে আটটার পর থেকে বৃষ্টি কমলেও মেঘলা আবহাওয়া সাথে ঝড়ো হাওয়ায় চৈত্র মাসেও অনুভূত হচ্ছে শীত।