ইলন মাস্কের মালিকানাধীন এক্স কর্পোরেশনের কৃত্রিম মেধা চ্যাটবট ‘গ্রোক’ সম্প্রতি হিন্দি ভাষায় গালিগালাজ ও উস্কানিমূলক শব্দ ব্যবহারের অভিযোগে ভারত সরকারের নজরে এসেছে। এমনকি, গ্রোকের প্রতিক্রিয়ায় অশ্লীল হিন্দি শব্দ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে, যা ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
২০২৩ সালে চ্যাটজিপিটি ও গুগলের জেমিনির বিকল্প হিসেবে গ্রোক চালু করে মাস্কের সংস্থা। পরবর্তীতে এটি এক্স-এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়, যা ভারতীয় নেটিজেনদের মধ্যেও জনপ্রিয়তা পায়। তবে, সম্প্রতি এক ব্যবহারকারী গ্রোকের সঙ্গে কথোপকথনের সময় অশ্লীল প্রতিক্রিয়া পান, যা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এমন ঘটনার পর তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এক্স-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে।
এই পরিস্থিতিতে, এক্স কর্পোরেশন কর্ণাটক হাইকোর্টে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। সংস্থার অভিযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ধারা ৭৯(৩)(বি) এবং ‘সহযোগ’ পোর্টালের ব্যবহার বেআইনি সেন্সরশিপ তৈরি করছে। তাদের দাবি, সরকার এই ধারা ব্যবহার করে আইনত বৈধ কনটেন্ট মুছে ফেলার আদেশ দিচ্ছে, যা সংবিধানবিরোধী। এছাড়া, ‘সহযোগ’ পোর্টালের মাধ্যমে সরকারি সংস্থা ও পুলিশ বিভাগকে কনটেন্ট অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা স্বচ্ছতা ও আইনি তদারকি ছাড়াই করা হচ্ছে।
এক্স কর্পোরেশন আদালতে দাবি করেছে, ধারা ৭৯(৩)(বি) ব্যবহার করে কনটেন্ট ব্লক করার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হোক এবং ‘সহযোগ’ পোর্টাল ব্যবহার করে কনটেন্ট অপসারণের আদেশ বন্ধ করা হোক। তাদের মতে, শুধুমাত্র ধারা ৬৯এ-কে কনটেন্ট ব্লকিংয়ের বৈধ আইন হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা উচিত।
এই ঘটনাপ্রবাহে ইলন মাস্কের গ্রোক এআই-এর সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। গ্রোক এআই ডিজাইনের মাধ্যমে এআই সিস্টেমের কাজগুলি গভীরভাবে অনুসন্ধান করে, যা গোপনীয়তার উদ্বেগ বাড়ায়। এটি ব্যক্তি, সংস্থা বা মালিকানাধীন অ্যালগরিদম সম্পর্কে সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করতে পারে। এছাড়া, দূষিত অভিনেতারা এআই সিস্টেমগুলিকে ম্যানিপুলেট করার জন্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে পারে, যা নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
বর্তমানে, কর্ণাটক হাইকোর্টে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৭ মার্চ নির্ধারিত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, গ্রোকের হিন্দি গালিগালাজ ও এক্স কর্পোরেশনের আইনি পদক্ষেপ নিয়ে প্রযুক্তি ও আইনজীবী মহলে আলোচনা চলছে।
