এই রবিবার দুপুরে হলদিয়ার রাজপথে বিশাল মিছিল ও জনসভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “হিন্দু সমাজ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে ২০২৬ সালে বাংলায় বড় পরিবর্তন আসবে।” তাঁর বক্তব্যে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন আলোচনার সূত্রপাত হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে এই সমাবেশের আহ্বান করেছিলেন তিনি। সভামঞ্চ থেকে বারবার হিন্দু ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বললেন, “যদি সামান্য সমর্থন পাই, তাহলে বাংলার পরিস্থিতি আমরাই পাল্টে দেব।”
নন্দীগ্রামের এই নেতা আত্মবিশ্বাসের সুরে জানান, “২০২৫ সালে দিল্লি, আর ২০২৬ সালে বাংলা আমাদের হাতের মুঠোয়।” তার এই বক্তব্য সমর্থকদের মধ্যে উদ্দীপনার ঝড় তোলে।
তবে এই হলদিয়াতেই কিছুদিন আগে বিজেপির বিধায়ক তাপসী মণ্ডল তৃণমূল শিবিরে যোগ দিয়েছেন, যা রাজনৈতিক মহলে নতুন চর্চার জন্ম দিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরে দলত্যাগের ঘটনা শুভেন্দু অধিকারীর জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হয়েছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সমাবেশ আয়োজন করে তিনি নিজের রাজনৈতিক শক্তি ও প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন।
শুভেন্দু অধিকারীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিয়ে মন্তব্য ঘিরে আগে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তিনি দাবি করেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কদের বিধানসভা থেকে বের করে দেওয়া হবে। তাঁর এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তোলে এবং বিরোধীদের পাশাপাশি বিজেপির মধ্যেও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ বিষয়ে সমর্থন জানাননি।
এমনকি, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও সংখ্যালঘু ইস্যুতে সতর্ক অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর আচরণ স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে শুভেন্দুর আক্রমণাত্মক মনোভাবের সঙ্গে তিনি একমত নন।
তবে শুভেন্দু নিজের অবস্থান বদলাননি। হিন্দুত্বের পতাকা সামনে রেখে তিনি আরও দৃঢ় হয়ে উঠলেন। দোলের সময় হওয়া অশান্তির প্রসঙ্গ টেনে হলদিয়ায় প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেন। প্রথমে পুলিশ অনুমতি না দিলেও, কলকাতা হাইকোর্টে আইনি লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সভার অনুমোদন পান তিনি। মিছিলে ‘হিন্দু একতার জয়’ লেখা ব্যানার হাতে নিয়ে সমর্থকদের বিপুল ভিড় নজর কাড়ে।
শুভেন্দু অভিযোগ করেছেন যে, তাঁর বিধানসভা সাসপেনশনের সময় রাজ্য সরকার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিল অনুমোদন করেছে। পাশাপাশি, তিনি মহাকুম্ভের পবিত্র স্নানের প্রসঙ্গও আলোচনায় তোলেন। ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে হিন্দু ঐক্যের এই বার্তা বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণে নতুন মোড় আনবে কি না, তা এখন সময়ই বলবে।
Leave a comment
Leave a comment