ওবিসি সংরক্ষণ ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজ্য সরকার আগেই ওবিসি সংক্রান্ত সার্ভে শুরু করে দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে নথি প্রকাশ করে শুভেন্দু জানান, সুপ্রিম কোর্ট ১৮ মার্চ থেকে সার্ভে চালুর অনুমতি দিলেও সরকার ১০ মার্চ থেকেই তা শুরু করে দিয়েছে। বিষয়টি হাইকোর্টে নিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার সংবিধান ও বিচারব্যবস্থার তোয়াক্কা না করে ওবিসি সংরক্ষণের নামে বিশেষ এক সম্প্রদায়কে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। তাঁর দাবি, ২০১১ সালের পর থেকে রাজ্য সরকার একতরফাভাবে ওবিসি তালিকায় ১১৩টি নতুন জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যার মধ্যে মাত্র চারটি হিন্দু জনগোষ্ঠী এবং বাকি ১০৯টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। এই সংরক্ষণ নীতির ফলে প্রকৃত ওবিসি শ্রেণির মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও দাবি করেন শুভেন্দু।
সংরক্ষণের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতের অভিযোগও তুলেছেন শুভেন্দু। কলকাতা পুলিশের সার্জেন্ট নিয়োগের একটি তালিকা দেখিয়ে তিনি বলেন, ৫০ জনের তালিকায় মাত্র দু’জন হিন্দু সম্প্রদায়ের, বাকি সবাই সংখ্যালঘু। তাঁর বক্তব্য, এই নিয়োগ সংরক্ষণের নামে ভোটব্যাংকের রাজনীতির প্রতিফলন।
শুভেন্দুর দাবি, সুপ্রিম কোর্ট থেকে তিন মাসের সময় চেয়ে নিয়েছে রাজ্য সরকার, অথচ তার আগেই সার্ভে শুরু করে দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, কোনও লিখিত নির্দেশ ছাড়াই রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা মৌখিকভাবে এই সার্ভে করাচ্ছেন। নন্দীগ্রামের একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সেখানে বিজেপি সভাপতির প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বিডিও-কে, যিনি স্বীকার করেন যে কোনও লিখিত আদেশ ছাড়াই তিনি কাজ করছেন।
এই ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মতে, সংরক্ষণের নামে তোষণের রাজনীতি করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভুল বোঝাচ্ছে সরকার, যা আদালতের নির্দেশনার পরিপন্থী। খুব শীঘ্রই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।