দেউচা-পাঁচামিতে জমি ও চাকরি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফের সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার সিউড়িতে বিজেপির জেলা দফতরে উপস্থিত হয়ে তিনি সরাসরি আক্রমণ শানালেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম এবং বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়ের বিরুদ্ধে। শুভেন্দুর অভিযোগ, এলাকার প্রকৃত বাসিন্দাদের বঞ্চিত করে বহিরাগতদের পিডিসিএলে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে, জমি কেনাবেচার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ৫৫ জনকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং ভূমিহীনদের পাট্টার রেকর্ড গায়েব করে জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি জানিয়ে দিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা সুনীল মুর্মু এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন এবং তাঁকে সবরকম আইনি সহায়তা দেওয়া হবে। রামনবমীর পর জেলাশাসকের দফতর অভিযানেও নামবে বিজেপির তপশিলী জাতি উপজাতি সংগঠন।
তবে শুভেন্দুর সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন সামিরুল ইসলাম। তাঁর কটাক্ষ, শুভেন্দু রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে বলেই মিথ্যা অভিযোগের আশ্রয় নিচ্ছেন। তিনি স্পষ্ট জানান, তাঁর কোনও নিকট আত্মীয় দেউচা-পাঁচামিতে চাকরি পাননি, বরং প্রকৃত জমির মালিকদের যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই চাকরি দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, শনিবার সন্ধ্যায় জেলাশাসকের দফতরে দেউচা পাঁচামিতে পড়ে থাকা ১৩ নম্বর লটের পাঁচজন চাকরি প্রার্থীকে চতুর্থ শ্রেণির পদে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক বিধান রায় জানিয়েছেন, ১৫ নম্বর লটে ৯৯ জনের চাকরির অনুমোদন এসেছে, যার মধ্যে ৫২ জন চতুর্থ শ্রেণির পদে এবং বাকিরা পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেবেন। জমি কেনাবেচা বন্ধ থাকলেও ওয়ারিশ ও মিউটেশন সংক্রান্ত কাজ চালু রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, ভূমিহীনদের পাট্টা নিয়ে রাজ্য সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে পাট্টা দেওয়া হলেও তাদের চাকরির নিয়োগ আপাতত স্থগিত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সবমিলিয়ে দেউচা-পাঁচামি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা আরও চড়ছে। বিরোধীদের দাবি দুর্নীতির নিরপেক্ষ তদন্ত হোক, আর শাসক দলের পাল্টা জবাব—বিরোধীদের ‘মিথ্যাচার’ দিয়ে জনমানস বিভ্রান্ত করা বন্ধ করা হোক।
