পরিতোষ সাহা:বীরভূম
রোদের তেজে শুকিয়ে যেতে বসেছে খাল,বিল থেকে পুকুর।তৃষ্ণাত্ব থেকে যায় পাখিরা।পাখিদের খিদে ও তৃষ্ণা মেটাতে গাছে গাছে বাঁধা হল মাটির ভাঁড় ও খাবার জায়গা।রাখা হল জল ও খাবার।এমনই অভাবনীয় উদ্যোগ নিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
বীরভূম লাল মাটির দেশ হিসেবে পরিচিত।গ্রীষ্মের সময় এই জেলায় তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রি পেরিয়ে যায়।সাথে চলে গরম হাওয়া।সমস্ত জলাধার প্রায় শুকিয়ে হাঁ হয়ে থাকে।সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়ে পাখিরা।সেই ভাবনা থেকেই গ্রীষ্মের শুরুতেই ময়ুরেশ্বর থানার কোটাসুর গ্রামে গড়ে উঠল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সেবামঞ্চ’।স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য পাখিদের বাঁচানো।তাই গ্রীষ্মের শুরুতেই এই এলাকার কোটাসুর,গড়গড়িয়া,উঁচপুর,মৌঠা গ্রামের বিভিন্ন গাছে মাটির পাত্র ও খাবারের জায়গা বেঁধে দেওয়া হল।মাটির পাত্রে রাখা জল ও অন্য পাত্রটিতে রাখা হল পাখিদের খাবার।
কিন্তু কেন এই ভাবনা? স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক সুকান্ত রায় বলেন,“আমরা এই সংগঠনটি গড়ে তুলেছি মূলত পশু ও পাখিদের বাঁচাতে।কারণ,রাস্তায় থাকা পশুদের ও গাছে থাকা পাখিদের নিয়ে আমরা তেমন ভাবে কেউ ভাবিনা।কিন্তু গ্রীষ্মের সময় জল ও খাবারের অভাবে আমাদের অজান্তে অনেক পাখি মারা যায়।তার হিসেব কেউ রাখি না।তাই আমাদের সংগঠনের পঞ্চাশ জন সদস্যের মিলিত ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ।তাই আমরা এই এলাকার যত গ্রাম আছে,প্রতিটি গ্রামের বিভিন্ন গাছে পাখিদের জন্য খাবার ও জলের পাত্র রাখবো।আর সেগুলি দেখাশোনা করবে ওই গ্রামের সদস্যরাই।”
রবিবার থেকেই এই সংগঠনটির পথ চলা শুরু।শুরুর দিনেই এলাকার চারটি গ্রামের বিভিন্ন গাছে বাঁধা হল জলের জন্য মাটির পাত্র ও খাবার জায়গা।পাখিরা গাছে বসেই তাদের ক্ষিদে ও তৃষ্ণা মেটাতে পারবে।সংগঠনের আর এক সদস্য অভ্রজিত মণ্ডল বলেন,“আমাদের সংগঠন আজ চারটি গ্রামে এই উদ্যোগ নিয়েছি।আমরা চাই গোটা জেলায় এই উদ্যোগকে ছড়িয়ে দিতে।তাতে পাখি বাঁচবে।আর পাখি বাঁচলে মনুষ্যসমাজও বাঁচবে।কারণ,ফসলের ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ খেয়ে পাখিরা ফসল বাঁচিয়ে রাখে।প্রকারান্তরে বেঁচে থাকে মনুষ্যসমাজ।তাই পাখিদের বাঁচাতে আমাদের এই উদ্যোগ।”
গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে পাখিদের বাঁচাতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।