সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
পবিত্র ঈদের অনুষ্ঠান ভঞ্জোকে রাজনীতির মঞ্চে পরিণত করছে তৃণমূল কংগ্রেস। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের এই রাজনীতি করনের তীব্র আপত্তি তুললেন নওশাদ সিদ্দিকীর দল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট তথা আইএসএফ। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট এর পক্ষ থেকে একটা রাজনৈতিক বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ঈদের মঞ্চকেও রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তৃণমূল নয়, তৃণমূলের পাশাপাশি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে রাজনীতিকরণের অবিরাম চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপিও বলে এই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর এ ধরনের আচরণের জন্য অন্যান্য ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মুসলমানদের সামাজিক দূরত্ব আরো বাড়ছে বলে গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ করা হয়েছে এই রাজনৈতিক বিবৃতিতে। অথচ বিজেপি বা অন্যান্য দল যখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে তখন তাদের বিরুদ্ধে কোন সরকারি পদক্ষেপ করা হচ্ছে না কেন ? তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে এই রাজনৈতিক বিবৃতিতে। উল্লেখযোগ্য, গতকাল রেড রোডে পবিত্র ঈদের নামাজ অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে বিজেপিকে দাঙ্গা বাঁধানো এবং হিন্দু মুসলমানের বিভাজনের রাজনীতির নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বা জাতীয় সংহতি বজায় রাখার বার্তাও দেন। যদিও ঈদ উল ফিতর একটি পবিত্র ও খুশি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে কোন মুখ্যমন্ত্রী বা শাসকদলের সভানেত্রী যেভাবে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে ইঙ্গিত করে রাজনৈতিক বক্তব্য তুলে ধরেন তা ওই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মাহাত্মককে লঘু করে বলে মনে করছেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নেতৃত্ব। পাশাপাশি নওশাদ সিদ্দিকীর প্রশ্ন তুলেছেন, বিধায়ক হিসেবে বিধানসভায় যখন দিনের পর দিন তার অধিকার খর্ব করা হয় সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসক দলের নেত্রী কি পদক্ষেপ করেন? মুসলিমদের উন্নয়ন বা সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে সরকারি পদক্ষেপের কথা রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরতেই পারেন। কিন্তু পবিত্র ঈদের মঞ্চকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক বক্তব্য তুলে ধরা বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে মুসলমানদের প্রতি বিরূপ মনোভাব তৈরির চেষ্টা বলেই মনে করেন নওশাদ। আর দলের একমাত্র বিধায়কের এই বক্তব্যই ফুটে উঠেছে দলীয় রাজনৈতিক বিবৃতিতে। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই নোমান নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বৈঠক করেন নওশাদ। সেই বৈঠক নিয়ে অনেক রাজনৈতিক জল ঘোলা হয়েছে। এমনকি নওশাদ তৃণমূল যোগ দিচ্ছেন কিনা তা নিয়েও আগ্রহী হয়েছে রাজনৈতিক মহল। এমনকি তার পরবর্তীতে ফুরফুরা শরীফ নিয়ে বৈঠকের ডাক পান নওশাদ সিদ্দিকী। এমতাবস্থায় ঈদের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে নওশাদের দল আইএসএফ নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক উস্কে দিল তা বলাই যায়।