পরিতোষ সাহা:বীরভূম
মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত খুলতে চলেছে।মাধ্যম বেলুন।সেই বেলুনের সাথে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যুক্ত করে মহাকাশে উড়িয়ে দিয়ে বিভিন্ন গবেষণামূলক তথ্য সংগ্রহ করা।সেই তথ্য সংগ্রহে অন্যান্য দেশ গুলি এগিয়ে থাকলেও, ভারত কিছুটা পিছিয়ে ছিল।এবার সেই তালিকায় পাকাপাকি ভাবে জায়গা করে নিল ভারত।
ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের বিজ্ঞানীরা রাজ্যে প্রথম বেলুন উৎক্ষেপণ কেন্দ্র গড়ে সেখান থেকে বেলুন উৎক্ষেপণ করে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করল।মূলতঃএই বেলুন সাধারণ আবহাওয়া,মহাকাশের রেডিয়েশন,ব্ল্যাকহোল,সূর্যের বিস্ফোরণ প্রভৃতি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে।আর সেই তথ্য নিয়ে গবেষণার কাজে লাগাবেন বিজ্ঞানীরা।বৃহষ্পতিবার সংস্থার নিজের জায়গায় এই উৎক্ষেপণ পর্ব সারলেন বিজ্ঞানীরা।উপস্থিত বিজ্ঞানীদের মধ্যে ভারত ছাড়াও জাপান,রাশিয়া সৌদি আরব ও মঙ্গোলিয়ার জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা হাজির ছিলেন।এদিন পরীক্ষামূলক ভাবে একটি বেলুন তার সাথে পেলোট(মহাকাশ গবেষণার জন্য যন্ত্রপাতি) পাঠানো হল।
ইণ্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন,“এই চন্দ্রপুর এলাকায় আমাদের নিজস্ব ছ’বিঘা জমি কিনে, আমাদের সেন্টার চালু করা হল।এই সেন্টার থেকে বড় বড় বেলুন যার ওজন ১০০ থেকে ১৫০ ফুটের বেলুন,যার সাথে পেলোট বাঁধা থাকবে।সেটি বায়ুমণ্ডলের স্টেটোস্ফিয়ারে পাঠানো হবে।যেটি এতদিন নাসা বা ইসরো করে আসছিল।সেই একই পন্থা অবলম্বন করে ছোটো যন্ত্রপাতি পাঠানো হবে।সেই যন্ত্রপাতির সাহায্যে মহাকাশ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তারা পাঠাবে।আর সেগুলি নিয়ে গবেষণা করা হবে।”
তবে এই বীরভূম জেলার চন্দ্রপুর এলাকা কেন? তারও বিশ্লেষণ করেছেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী।তিনি জানান,“এতদিন বোলপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে বেলুন পাঠানো হত।তাতে সমস্যা হত।কারণ,সেই বেলুন অনেকসময় পড়শি দেশ বাংলাদেশে পড়ে যেত।তাতে আন্তর্জাতিক সমস্যা তৈরি হত।আর চন্দ্রপুর অঞ্চল বাছাই করা হয়েছে এই কারণে,এখান থেকে বাংলাদেশের দূরত্ব অনেক দূরে।গঙ্গা নদী থেকে এই অঞ্চল ৫৫ কিলোমিটার দূরে।আর সর্বপরি এই এলাকা দিয়ে কোন প্লেন বেশি ওড়ে না।ফলে এই এলাকা বেছে নেওয়া হয়েছে।পাশাপাশি এই অঞ্চল থেকে জাতীয় সড়ক খুব কাছেই।কোন কিছুর জন্য বেলুন কে নামাতে গেলে,সেই জাতীয় সড়ক ব্যবহার করা হবে।”
তবে,মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এই বেলুন অনেকটাই কার্যকরী ভূমিকা নেবে বলে আশা করেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা।অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে এই গবেষণা কেন্দ্রকে ঘিরে নতুন নতুন পরিকল্পনার চিন্তাভাবনা করা হয়েছে।যা আগামীদিনে ছাত্রছাত্রীদের কাজে লাগবে।
