মঙ্গলবার ভারতে আসছেন দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামদান বা দুবাইয়ের যুবরাজ।এটি হবে শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ আল মাকতুমের দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে ভারতের প্রথম সরকারি সফর। ৮-৯ এপ্রিল এই সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদী, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।সোমবার ভারতের বিদেশমন্ত্রী মন্ত্রণালয় থেকে একথা জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে, দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স, সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর (ইউএই) উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ আল মাকতুম ভারতে এই সরকারি সফরে আসছেন। এস জয়শঙ্কর এই বছর ২৭-২৯ জানুয়ারি সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সফরের সময় ক্রাউন প্রিন্সকে প্রধানমন্ত্রীর তরফে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী মঙ্গলবার এই বিশিষ্ট অতিথির জন্য একটি কার্যকরী মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন। এছাড়াও ক্রাউন প্রিন্স পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ভারত ও ইউএই-এর মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঐতিহাসিক সফরের পর থেকে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ঐতিহ্যগতভাবে, দুবাই ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ইউএইতে বসবাসকারী ভারতের প্রায় ৪৩ লক্ষ প্রবাসীর বেশিরভাগই দুবাইয়ে থাকেন এবং কাজ করেন। মহামান্য ক্রাউন প্রিন্সের এই সফর ভারত-সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত করবে এবং দুবাইয়ের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে।”
এস জয়শঙ্কর এই বছর ২৭-২৯ জানুয়ারি ইউএই সফরের পর এক্স-এ লিখেছিলেন, “দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মহামান্য শেখ হামদান মোহাম্মদের সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দিত। আমাদের গভীর বন্ধুত্বের বন্ধন এবং আমাদের জনগণের কল্যাণে তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে উষ্ণ আলোচনা হয়েছে।” এই সফর দুবাইয়ের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ককে আরও জোরদার করেছে।
দিল্লির পর ক্রাউন প্রিন্স মুম্বাই সফর করবেন এবং উভয় দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি ব্যবসায়িক গোলটেবিলে অংশ নেবেন। এই আলোচনা ভারত-সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতাকে ঐতিহ্যগত এবং ভবিষ্যৎ-মুখী ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী করবে। এই গোলটেবিলে পরিকাঠামো এবং শক্তির মতো ঐতিহ্যগত ক্ষেত্রগুলির পাশাপাশি ফিনটেক, উদ্ভাবন এবং টেকসই উন্নয়নের মতো উদীয়মান ক্ষেত্রে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ খুঁজে বের করা হবে।
দুবাই দীর্ঘদিন ধরে ভারতের সঙ্গে ইউএই-এর বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে আসছে। আমিরশাহীতে বসবাসকারী প্রায় ৪৩ লক্ষ ভারতীয় প্রবাসী সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশ দুবাইয়ে বসবাস করে, যা দুই দেশের মধ্যে গভীর জনগণের সম্পর্কের ভিত্তি। এই সফর ভারত-ইউএই ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বে নতুন গতি যোগ করবে এবং দুবাইয়ের সঙ্গে ভারতের প্রাতিষ্ঠানিক ও জনগণের স্তরের সম্পর্ককে আরও উন্নত করবে।