সোমবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন নেতাজি ইন্ডোরে। কিন্তু বৈঠক থেকে বেরিয়ে আসার পর চাকরিপ্রার্থীদের বেশিরভাগ জনই হতাশ। কিভাবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে তারা বেরিয়ে আসবেন সেই বিষয়ে কিছুই কূলকিনারা পাচ্ছেন না তাঁরা।
এবার নেতাজি ইনডোরে হওয়া সেই বৈঠক নিয়ে সরকার তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সাতটি প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি বিস্তারিত লিখেছেন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে।
এদিন তিনি লেখেন,”২৬ হাজার চাকরিহারাদের সাথে নাটকীয় বৈঠক—নেতাজি ইন্ডোরে মমতার নাটক নিয়ে কিছু নির্মম প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২৬ হাজার চাকরি হারানো প্রার্থীদের নিয়ে নেতাজি ইন্ডোরে সভা করলেন। কিন্তু আমরা কয়েকটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিতে চাই—সোজাসাপ্টা, নির্মম সত্যের প্রশ্ন—”। এরপর থেকে এই প্রশ্ন করতে শুরু করেন বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি লেখেন,
“১. যদি সত্যিই “যোগ্যদের” নেতাজি ইন্ডোরে ঢোকার কাগজ দেওয়া হয়ে হয়ে থাকে, তবে মুখ্যমন্ত্রী জানেন কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য?
২. নেতাজি ইন্ডোরের আসন সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। সভায় ডাকলেন মাত্র এতজনকেই। বাকি ১৪ হাজার কি ‘অযোগ্য’?
৩. সুপ্রিম কোর্টের কাছে নাকি তিনি যোগ্য-অযোগ্যর তালিকা চাইবেন! সুপ্রিম কোর্ট কি তাঁর দলের ক্যাডার? উনি জানেন না নাকি, এটা কমিশনের কাজ ছিল?
৪. তিনি বললেন, আগে যোগ্যদের দেখছেন, পরে অযোগ্যদেরও দেখবেন! মুখ্যমন্ত্রী, আপনার এই ‘অযোগ্য’দের জন্যই তো হাজারো যোগ্য প্রার্থীকে বলি দেওয়া হয়েছে! অযোগ্যদের ওপর এত প্রেম কিসের? টাকা খেয়েছেন বলে?
৫. শিক্ষকদের বলছেন স্বেচ্ছাসেবক হয়ে পড়াতে! বিনামূল্যে? এই কাজ তো আপনার নেতা-মন্ত্রীরা করুক! তাদের প্রাসাদ, জমি, বেআইনি টাকা বিক্রি করে শিক্ষকদের বেতন দিন—রাজি কি আপনি?
৬. সভার কার্ড বিতরণ নিয়েই যদি এত জালিয়াতি হয়, তাহলে আপনি কীভাবে যোগ্য-অযোগ্য বিচার করবেন?
৭. শিক্ষাব্যবস্থা বাঁচাতে চান বলে চাকরিহারাদের ‘সিভিক শিক্ষক’ বানাতে চাইছেন? এটা কি নতুন অপমান নয়?
মুখ্যমন্ত্রী, আপনার দলের দুর্নীতির জন্য আজকের এই দিন দেখতে হচ্ছে। চাকরি বাঁচাতে নয়, নিজের দল আর নেতাদের বাঁচাতে আপনি নাটক করছেন। কিন্তু ইতিহাস ক্ষমা করবে না।”
এদিন নেতাজি ইন্ডোরে চাকরিহারাদের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পরেই কালীঘাট চলো ডাক দিয়েছিল বিজেপি। আগে থেকেই পুলিশের তরফ থেকে করে রাখা হয়েছিল ব্যারিকেড।সেখানে পুলিশের সঙ্গে তুমুল ধস্তাধস্তি চলে বিজেপি নেতা কর্মীদের।
ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। এদিন কালীঘাট চলো অভিধানের আগেই আটক করা হয় বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে।