তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে যেন একপ্রকার ‘গৃহযুদ্ধ’! আর সেই যুদ্ধ এখন আর গোপন নেই, প্রকাশ্যে বিস্ফোরণ ঘটালেন দুই বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌগত রায়। এক মহিলা সাংসদের সঙ্গে কল্যাণের বাকযুদ্ধ সামনে আসতেই দলের অন্দরমহলের সংঘাত প্রকাশ্যে উঠে এল।
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য তৃণমূল সাংসদদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট ও একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন। সেই সূত্র ধরেই দলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সৌগত রায়। তাঁর দাবি, কল্যাণ ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পেয়ে তিনি নিজের ইচ্ছেমতো চলেছেন বলে অভিযোগ তোলেন প্রবীণ সাংসদ।
সাংবাদিক বৈঠকে পাল্টা আক্রমণ শানান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “আমি কীসের অপব্যবহার করেছি? আমি তো দিদির নির্দেশ মতোই কাজ করেছি। আমাদের দলে নেত্রী যা বলেন, সেটাই হয়।” এখানেই থামেননি কল্যাণ। সরাসরি বলেন, “দলের ভাবমূর্তি সৌগত রায়ের জন্যই অনেকবার নষ্ট হয়েছে। নারদা কাণ্ডে তাঁর নাম ছিল। তখন মানুষ তাঁকে দেখলেই বলত ‘চোর’। সেই সময় আমাদের মুখ লুকিয়ে থাকতে হতো।”
সৌগত রায়কেও কটাক্ষ করে বলেন, “ওর কোনো ক্যারেক্টার আছে নাকি? এক জায়গায় এক কথা, আরেক জায়গায় অন্য কথা বলে।” তিনি আরও দাবি করেন, সৌগত রায় ২০০১ সাল থেকে তাঁকে পছন্দ করেন না। কারণ হিসেবে বলেন, “ও প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর লোক ছিল। চোরগুলো সব এক জায়গায় এসে গেছে!”
এই প্রসঙ্গে সৌগত রায় বলেন, “কল্যাণের রুচি, সভ্যতা, শ্লীলতা—সবই কম। নারদায় যদি আমি চোর হতাম, তাহলে কোর্টে সেটা প্রমাণ হয়নি কেন?”
তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতার এই কাদা ছোড়াছুড়িতে অস্বস্তিতে দল। ভোটের মুখে এমন অন্দরকলহ ঘিরে দলের ভাবমূর্তি যে ধাক্কা খেতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।