মুম্বইয়ের পলি হিল এলাকায় অবস্থিত শাহরুখ খান ও গৌরী খানের অভিজাত রেস্তরাঁ ‘তরী’ সম্প্রতি এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। জনপ্রিয় ইউটিউবার ও ফুড ব্লগার সার্থক সচদেব তরী রেস্তরাঁয় গিয়ে একটি ভিডিও বানান, যেখানে তিনি দাবি করেন, সেখানে পরিবেশিত পনির আসল নয় বরং স্টার্চযুক্ত, অর্থাৎ ভেজাল।
সার্থক নিজের ভিডিওতে দেখান, তিনি একটি পনির-ভিত্তিক পদ অর্ডার করেন এবং সেই পনিরে আয়োডিন ফেলে পরীক্ষা করেন। পরীক্ষায় দেখা যায়, সেই পনির কালচে হয়ে যায়, যা সাধারণত স্টার্চের উপস্থিতির লক্ষণ। এই দেখে তিনি মন্তব্য করেন, “শাহরুখ খানের রেস্তরাঁয় এমন ভেজাল জিনিস থাকবে, ভাবতেই পারিনি।” ভিডিওটি প্রকাশের পর মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়।
এরপর তরী রেস্তরাঁর পক্ষ থেকে একটি ব্যাখ্যামূলক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, “আমাদের ব্যবহৃত পনির প্রাকৃতিক উপাদান ও সোয়া ভিত্তিক। আয়োডিন পরীক্ষায় যে পরিবর্তন ঘটে তা পনিরে স্টার্চ আছে তা প্রমাণ করে না, কিংবা এটি নকল তা নিশ্চিত করে না। আমাদের সব উপাদান নিরাপদ ও মানসম্পন্ন।”
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গৌরী খান তরী রেস্তরাঁর উদ্বোধন করেন। সেদিন শাহরুখ খান নিজেও উপস্থিত ছিলেন। রেস্তরাঁটি তার চমৎকার অভ্যন্তরীণ সজ্জা ও উচ্চমানের জাপানি খাবারের জন্য ইতিমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছে। এই প্রথমবার তারা এভাবে বিতর্কে পড়ল।
সার্থক সচদেব এর আগে বিরাট কোহলি, অনুষ্কা শর্মা এবং শিল্পা শেট্টির রেস্তরাঁয় গিয়েছেন এবং প্রশংসাও করেছেন। কিন্তু তরী সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা তাঁকে হতবাক করেছে। ভিডিওতে তিনি দর্শকদের সতর্কও করেন, বলেন যে এত দামী রেস্তরাঁ থেকেও যদি এমন খাদ্য পরিবেশন হয়, তবে সাধারণ মানুষ কী করবে?
এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ কেউ তরীর সমালোচনা করেন ও ভোক্তা অধিকার রক্ষা আইনের আওতায় পদক্ষেপের দাবি তোলেন, আবার অনেকে ইউটিউবারের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কেউ বলেন, একবারের পরীক্ষায় পুরো রেস্তরাঁর মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঠিক নয়।
তবে এই ঘটনায় তরী রেস্তরাঁর ভাবমূর্তি যে কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তা বলাই যায়। প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তী সময়ে আরও স্বচ্ছতা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হবে বলে আশা করা যায়।
সব মিলিয়ে এই বিতর্ক রেস্তরাঁ ও ইউটিউবার উভয়ের দিকেই নজর টেনেছে এবং জনমানসে নতুন করে খাদ্য সচেতনতা বাড়িয়ে তুলেছে। এখন দেখার, তরী রেস্তরাঁ এই সমালোচনার কীভাবে মোকাবিলা করে এবং তাদের প্রমাণিত মান ধরে রাখতে কতটা সফল হয়।