৩১ মে-র মধ্যে নতুন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
সাময়িক স্বস্তি রাজ্য ও চাকরি-হারা শিক্ষকদের
সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
স্বস্তি রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের। আপাতত স্বস্তি যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক শিক্ষিকাদের। নবম দশম এবং একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর যারা যোগ্য অথচ দাগি হিসেবে বিবেচিত নন তারা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকতে পারবেন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আর্জিতে এই রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ। তবে ৩১ মে-র মধ্যে নতুনভাবে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে যার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাও জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যদি ৩১ মেয়ের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করা হয় তাহলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কে জরিমানা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আর্জি শুধুমাত্র শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্যই মেনে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। গ্রুপ সি গ্রুপ ডি বা শিক্ষা কর্মীরা এক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত নন বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কারণ গ্রুপসি গ্রুপ ডি শিক্ষা কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। স্বাভাবিকভাবেই সুপ্রিম কোর্টের এই রায় হকের স্বল্পতা নিয়ে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর যে দিশেহারা অবস্থায় পড়েছিল তা থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলল। একই সঙ্গে যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাময়িক স্বস্তি মিললেও যতক্ষণ না স্থায়ী সমাধান হচ্ছে ততক্ষণ তাদের স্বস্তি নেই বলে জানিয়েছেন চাকরিহারারা। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে সমস্ত চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা আপাতত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকবেন। যাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই বা যারা দাগি নন তারা ৩১শে ডিসেম্বরের পরেও চাকরিতে বহাল থাকবেন। তবে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান শিক্ষক রাই চাকরি পাবেন এমন কোন অধিকার তাদের জন্মায়নি বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত গত বছরের 22 শে এপ্রিল ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। চলতি বছরের ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশকেই বহাল রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের পক্ষে রায় দেয়। সেই সঙ্গে চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মী। যারা অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছেন তাদের বেতন ফেরত এরও নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পর ফের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পুনট বিবেচনা করে আদালতে আবেদন জানায় রাজ্য সরকার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন। তিন পক্ষই আদালতে আবেদন জানায় যে যোগ্য অযোগ্যদের আলাদা করে তালিকা তৈরি করা কিভাবে সম্ভব যখন মূল ওএমআর শিট বা আসল উত্তরপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। কোন উত্তরপত্রকে সঠিক বলে ধরা হবে সেটা নিয়েই তো জটিলতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল, এই মামলায় আসল তথ্য জানা প্রায় অসম্ভব। পরিশেষে পুরো প্যানেল বাতিল করে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া করার কথা জানায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।