স্নিগ্ধা চৌধুরী
পৃথিবীর প্রতিটি কোণে আজ বেজে উঠেছে ঐতিহ্যের সুর। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডে উপলক্ষে যখন বিশ্ব একজোট হয়ে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সৃষ্টির রক্ষার অঙ্গীকারে শপথ নিচ্ছে, তখন শান্তিনিকেতনের বুকে স্থিত বিশ্বভারতী যেন আপন ঐশ্বর্যে আরও একবার দীপ্তমান।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ইউনেস্কো যখন বিশ্বভারতীকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তখন শুধু একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান নয়, গানের ভাষায়, ছবির রঙে, প্রকৃতির ছায়ায় গড়ে ওঠা এক দর্শনই মর্যাদা পায়। বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে গড়া সেই শিক্ষাকেন্দ্র, যেখানে পাঠ্যপুস্তকের গন্ডির বাইরে গিয়ে খোলা আকাশের নীচে, গাছের ছায়ায়, মানুষ শিখে নিজেকে ও বিশ্বকে।
আজকের দিনে শান্তিনিকেতনে আয়োজিত হয়েছে বিশেষ কর্মসূচি। ছাতিমতলা থেকে চাতুরঙ্গ, উপাসনা গৃহ থেকে কলাভবন সর্বত্রই যেন শোভাযাত্রা, শিল্পপ্রদর্শনী ও গান-বাজনার আবেশে জেগে উঠেছে ‘প্রকৃতি ও মননের মিলনক্ষেত্র’। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকবৃন্দ মিলে পরিবেশন করেছেন রবীন্দ্রনাথের গান ও নৃত্যনাট্য, যা কেবল বিনোদন নয়, এক ধরনের বোধের আলো ছড়িয়ে দিয়েছে।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য এক বার্তায় বলেন, বিশ্বভারতী শুধু আমাদের গর্ব নয়, এটি গোটা বিশ্বের এক মেলবন্ধনের প্রতীক। আজকের দিনটিতে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই সেই ঐতিহ্যকে, যা আমাদের অতীতের সঙ্গে ভবিষ্যতের সেতু গড়ে দেয়।
বিশ্বভারতী আজ শুধু একটি শিক্ষাকেন্দ্র নয়, একটি অনুভব, একটি জীবনদর্শন। ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডে-র এই মুহূর্তে শান্তিনিকেতন যেন হয়ে উঠেছে এক জীবন্ত কবিতা! যেখানে প্রতিটি বৃক্ষ, প্রতিটি ধুলিকণা বলে উঠছে, এখানে বিশ্ব আসে মিলনে, শান্তির বার্তা নিয়ে।
আজ তাই শুধু দিন নয়, এক অনুভব ‘ঐতিহ্য বাঁচলে ভবিষ্যৎ হাসবে’।