ক্রমেই বাড়ছে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির বাণিজ্য বিবাদ। ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ দিয়ে শুরু হলেও ক্রমেই চওড়া হচ্ছে দুদেশের বাণিজ্য সঙ্কটের ফাটল। ক্রমবর্ধমান শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে চিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে গিয়ে কেউ যেন বেজিংয়ের স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে। বেজিং আরও জানিয়েছে, তারা নিজেদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় যথেষ্ট সক্ষম এবং প্রস্তুত।
চিনের এই সতর্কবার্তা এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন কিছু দেশকে আমেরিকার সঙ্গে ট্যারিফ নিয়ে আলোচনা করতে চাপ দিচ্ছে।পাশাপাশি সেসব দেশ চিনের সঙ্গে বাণিজ্য কমিয়ে দেওয়ার দিকেও ইঙ্গিত দিচ্ছে। আমেরিকা যখন গোটা বিশ্বের ওপর ১০ শতাংশ হারে শুল্ক বসাচ্ছে, তখন চিনের পণ্যের ওপর সেই হার ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। পাল্টা জবাবে চিন আমেরিকান পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
শুল্ক নিয়ে আমেরিকা এবং চিনের সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হচ্ছে। চিনের সঙ্গে বাণিজ্যে হ্রাস টানলে বিভিন্ন দেশের উপর আরোপিত শুল্ক কমিয়ে দেবেন ট্রাম্প – সম্প্রতি কয়েকটি রিপোর্টে এমন দাবি করা হয়েছে।ট্রাম্প নিজে জানিয়েছেন, একাধিক দেশ তাঁর সঙ্গে শুল্ক-সমঝোতায় আসতে চেয়েছে। সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিল চিন। চিনের বাণিজ্য মন্ত্রক সোমবার জানিয়েছে, তারা “কোনও দেশের এমন চুক্তিকে তীব্রভাবে বিরোধিতা করে” যা আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর বিনিময়ে চিনের স্বার্থকে নষ্ট করে।বেজিং আরও বলেছে, “অন্যের ক্ষতির বিনিময়ে নিজের স্বল্পমেয়াদী স্বার্থ খোঁজা মানে শেষ পর্যন্ত এটি ব্যর্থ হবে এবং দুতরফের ক্ষতির কারণ হবে।”
আমেরিকার কুর্সিতে বসার পর থেকেই বেজিং বিরোধী পথে হেঁটেছেন ট্রাম্প।বিভিন্ন দেশের উপর চড়া হারে শুল্ক আরোপ হলেও ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত রাখা হয়েছে, তবে ব্যতিক্রম কেবল চিন। গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, শুল্ক নিয়ে চিনের সঙ্গে সমঝোতার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। তবে এবার বেজিংয়ের কড়া বার্তা ফের সমঝোতার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। এমন অবস্থায় সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে, “কোনো পক্ষ যদি চিনের স্বার্থের ক্ষতি করে কোনও চুক্তি করে, চিন কখনই তা মেনে নেবে না এবং উপযুক্ত পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
তবে এই বানিজ্য যুদ্ধে আমেরিকাকে খোলা মাঠ ছেড়ে দিতে রাজি নয় বেজিং।আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে ভারত,ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন দেশকে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। একইসঙ্গে আমেরিকার সঙ্গে এই শুরু হওয়া বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে মনোযোগ দিয়েছে বেজিং। এর অংশ হিসেবে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও কম্বোডিয়া সফরও করেছেন চিনা প্রেসিডেন্ট।
Leave a comment
Leave a comment